‘সম্পদ বিনিয়োগ ও সংরক্ষণ প্রবিধানমালা ২০১৯’ চূড়ান্ত

পুঁজিবাজারে সম্পদের ৫৫ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে জীবন বীমা কোম্পানিগুলো

সময়: বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০১৯ ১১:০৩:১৮ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনুমোদিত ও স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির অগ্রাধিকার বা সাধারণ শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও ইউনিট ফান্ড এবং ডিবেঞ্চারে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হারে মোট সম্পদের ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে জীবন বীমা কোম্পানিগুলো। এমন বিধি রেখে জীবন বীমা কোম্পানির সম্পদ বিনিয়োগ ও সংরক্ষণ প্রবিধানমালা ২০১৯ চূড়ান্ত করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। যা গত ১৯ নভেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।

নতুন প্রবিধানমালা অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকার বা সাধারণ শেয়ারে সম্পদের ২৫ শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড ও ইউনিট ফান্ডে ২০ শতাংশ এবং ডিবেঞ্চারে সম্পদের ১০ পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যাবে। তবে কোনভাবেই ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারে বিনিয়োগ করা যাবে না।

প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, জীবন বীমা কোম্পানিগুলো সম্পদের ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির তফসলি ব্যাংকে আমানত হিসেবে গচ্ছিত রাখতে পারবে। তবে শর্ত হলো, কোন একটি ব্যাংকে গচ্ছিত স্থায়ী আমানত , চলতি আমানত, আংশিক স্থায়ী বা আংশিক চলতি আমানতের পরিমাণ সম্পদের ১০ শতাংশের বেশি হবে না। প্রবিধানমালায় আরও বলা হয়েছে, সম্পদের ১০ শতাংশ পর্যন্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী আমানত হিসেবে বিনিয়োগ করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো কোনো একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানতের পরিমাণ ২ শতাংশের বেশি হবে না।

এ প্রসঙ্গে আইডিআরএ সদস্য বোরহান উদ্দীন আহমেদ ‘দৈনিক শেয়াবাজার প্রতিদিন’-কে বলেন, ‘বিনিয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আদলে প্রবিধানমালাটি তৈরি করা হয়েছে। এটি নিয়ে আমরা একাধিকবার স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছি। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করেই প্রবিধানমালাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে।’

সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে বিনিয়োগের বিষয়ে প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনক্রমে মোট সম্পদের ১০ শতাংশ সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারবে জীবন বীমা খাত। একইভাবে জীবন বীমা কোম্পানির সম্পদের ৫ শতাংশ বিনিয়োগ করা যাবে অন্যান্য প্রকারের সম্পদে।

নতুন প্রবিধানমালা অনুযায়ী, সম্পদের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে পারবে জীবন বীমা কোম্পানিগুলো। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের গ্যারান্টিযুক্ত ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ইস্যুকৃত ‘ডাবল এ’ ক্যাটাগরির বন্ডে সম্পদের ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করা যাবে। এদিকে সিটি করপোরেশন কর্তৃক ইস্যুকৃত ডিবেঞ্চার বা অন্যান্য সিকিউরিটিজে সম্পদের সম্পদের ৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগের সুযোগ পাচ্ছে জীবন বীমা কোম্পানিগুলো।

প্রবিধানমালায় স্থাবর সম্পত্তিতে বিনিয়োগের বিষয়ে বলা হয়েছে, সিটি করপোরেশন বা কোন পৌরসভায় অবস্থিত দায়হীন সম্পত্তিতে মোট সম্পদের ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগের সুযোগ পাবে জীবন বীমা কোম্পানিগুলো। তবে সম্পত্তি আবাসিক কাজে ব্যবহার করা হলে সম্পদের ২ শতাংশ এবং দাপ্তরিক বা দোকান হিসেবে ব্যবহারের জন্য ভাড়া দেয়া হলে সম্পদের ৫ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ করা যাবে না।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে সংসদে অনুমোদন পায় নতুন বীমা আইন। ২০১১ সালে গঠন হয় আইডিআরএ। এরপরই জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ বিষয়ে সময়োপযোগী একটি প্রবিধানমালা তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হয়। দফায় দফায় স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনায় বসে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। অবশেষে আইডিআরএ গঠনের নয় বছর পর চূড়ান্ত হলো এ বিনিয়োগ প্রবিধানমালা।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩১২ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged