editorial

পোর্টফোলিও’র তথ্য পাঁচার: নিরাপত্তাহীনতায় বিনিয়োগকারীরা

সময়: বুধবার, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০ ১১:৫৯:০৮ অপরাহ্ণ


ছোট হোক কিংবা বড়, একজন বিনিয়োগকারী সবসময় চায় তার লেনদেনের তথ্য অন্য কেউ না জানুক। যদিও বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী অন্যকোনো ভালো বিনিয়োগকারীকে অনুসরণ করতে চায়, কিন্তু তাই বলে অন্যের তথ্য চুরি করে নিজের ব্যবসা করাটা সামগ্রিক পুঁজিবাজারের জন্য অনেক ক্ষতিকর। বিনিয়োগকারীরা সবসময় একটা গোপনীয়তা চায়। তাদের গোপনীয়তা যখন থাকে না তখন তারা বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

আর সিকিউরিটিজ হাউজ কিংবা মার্চেন্ট ব্যাংকের মূল ব্যবসাই আসে বড় বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে। একজন বড় বিনিয়োগকারী কোনো শেয়ার কেনার পর যখনই তার কাছে ফোন চলে আসে আর বলে “ ভাই অমুক শেয়ার কিনলেন, কোনো তথ্য আছে কিনা” তখন ঐ বিনিয়োগকারীর জন্য তা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে।

যতদূর জানা যায়, কে কোন হাউজ থেকে কোন শেয়ার কিনছে বা বিক্রি করছে তাৎক্ষণিকভাবে তা বিএসইসি এবং ডিএসই’র সফটওয়্যার জানতে পারে। আর ট্রেডিংয়ের পর সিডিবিএল সে তথ্য জানতে পারে। এর বাইরে অন্যকারো বিনিয়োগকারীদের তথ্য জানার সুযোগ নেই। যদি তথ্য পাঁচার হয় তাহলে এখান থেকেই হচ্ছে বলে প্রাথমিকভাবে ধরে নেওয়া যায়। যদিও তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের শ’শ’ কোটি টাকা হ্যাক করে নিয়ে গেছে সেখানে এসব সফটওয়্যার হ্যাক করে অন্যের তথ্য চুরি করাটাও অসম্ভব নয়।

হয়তো কেউ লোভে পড়ে, কেউবা অতি মুনাফার আশায় নির্দিষ্ট কিছু বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিও সবসময় নজরদারিতে রাখছে। এখন কারা করছে কিভাবে করছে তা তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। তবে বিনিয়োগকারীদের ট্রেডিংয়ের তথ্য পাঁচারের বিষয়টি খুবই গুরুতর। আর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) সম্মিলিতভাবে এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি বিএসইসি কিংবা ডিএসই’র সফটওয়্যার ব্যবহার করে কেউ তথ্য পাঁচার করে থাকে তাহলে তাদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তা না হলে এই বাজারে বড় বিনিয়োগ হারিয়ে যাবে।

ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ যেমন দেখতে হবে বড় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থও দেখতে হবে। অবশ্য প্রায় প্রতিটি হাউজেই বড় বিনিয়োগকারীদের ট্রেডিংয়ের জন্য আলাদা রুমসহ নানা সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু বিনিয়োগকারীর লেনদেনই যদি গোপন না থাকে তাহলে সকল সুবিধা দিয়েও বিনিয়োগকারী ধরে রাখা যাবে না। এতে ক্ষতির মুখে পড়বে সিকিউরিটিজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক তথা সামগ্রিক পুঁজিবাজার।

Share
নিউজটি ১৩৬৫ বার পড়া হয়েছে ।