প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন

সময়: মঙ্গলবার, নভেম্বর ৫, ২০১৯ ৭:৪০:৪১ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভৌত সুরক্ষাসহ ৬টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে ‘জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি’ (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার ব্যয় করবে ৪ হাজার ৪৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে যোগান দেয়া হবে ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। একনেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানান, সভায় ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা (পিপিএস) নির্মাণ’ শীর্ষক নতুন একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি খরচে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। রূপপুর প্রকল্পটি সম্পর্কে মন্ত্রী জানান, নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জন্য ডিজাইন বেসিস থ্রেট (ডিবিটি) এবং এর বাইরের হুমকি মোকাবিলা করা হবে। সেই সঙ্গে কম্পিউটার বা সাইবার নিরাপত্তা এবং সংবেদনশীল তথ্যের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে। চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ৩০০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ১২ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৮ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভৌত সুরক্ষা (পিপিএস) ব্যবস্থা সংক্রান্ত কাজ, পিপিএস সংক্রান্ত কৌশল ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সংগ্রহ, সীমানা প্রাচীর (টহল রোড) নির্মাণ, পরামর্শক সেবা গ্রহণ, মোটর যান (৩টি জিপ, ৫টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ১টি মাইক্রোবাস, ২টি মোটর সাইকেল) ও জলযান হিসেবে একটি স্পিড বোর্ট সংগ্রহ, ৫৬টি কম্পিউটার সরঞ্জামাদি সংগ্রহ এবং সেমিনার বা কনফারেন্স এবং অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা।
একনেক সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ৩৬৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘যশোর (রাজারহাট)-মনিরামপুর-কেশবপুর-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়ক (আর-৭৫৫) উন্নয়ন’ প্রকল্প; ৭১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ফেনী-সোনাগাজী-মুহুরী প্রকল্প সড়কের ৩০তম কিলোমিটারে ৩৯১.৩৫ মিটার দীর্ঘ মুহুরী সেতু এবং বক্তারমুন্সী-কাজিরহাট-দাগনভূঁঞা সড়কের ১৩তম কিলোমিটারে ৫০.১২ মিটার দীর্ঘ ফজিলাঘাট সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প; ৩৬১ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘কক্সবাজার জেলার একতাবাজার থেকে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি মহাসড়ক (জেড-১১২৫) উন্নয়ন’ প্রকল্প; ৭৯ কোটি ১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘আগারগাঁওস্থ শেরেবাংলা নগরে পর্যটন ভবন নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; পানি ১২০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘সিলেট জেলার সিলেট সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলায় দশগ্রাম, মাহতাবপুর ও রাজাপুর পরগনা বাজার এলাকায় সুরমা নদীর উভয় তীরে ভাঙ্গন হতে রক্ষা’ প্রকল্প।
প্রকল্পগুলো সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রকল্পের কাজ তাড়াতাড়ি করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া আইএমইডি-কে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে ‘পিপিআর’ সংশোধন করা হয়। কেননা, এখনকার নিয়ম অনুযায়ী বড় ঠিকাদাররা কাজ পাচ্ছেন। বড় ঠিকাদারের পাশাপাশি দেখতে হবে যাতে ছোট এবং নতুন ঠিকাদারও যেন কাজ পায়, প্রতিযোগিতা বাড়ে। তবে মান ঠিক রাখতে হবে।
তিনি জানান, প্রায়ই আগ্রহ নিয়ে প্রকল্প পাস করা হয়, দালান-কোঠা নির্মাণ করা হয়। তারপরে আর বাকি কাজ হয় না। জনবল নাই, নয় যন্ত্রবল নেই। উনি বলেছেন, যে আগ্রহ নিয়ে আপনারা প্রকল্পের কাজ শুরু করেন, একই আগ্রহ নিয়ে আপনারা দয়া করে বাকি কাজগুলো করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার সঙ্গে একমত জানিয়ে পরিবল্পনামন্ত্রী বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ। এটার সঙ্গে আমি শতভাগ একমত। আমার নিজ এলাকায় এরকম কিছু স্থাপনা আছে। তড়িঘড়ি করে স্থাপনা করা হয়, তারপরে আর কাজ হয়না।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, দেশের নদীগুলোকে অহেতুক সেতু নির্মাণ না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনিতেই নদী গুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তার উপর যদি অহেতুক সেতু নির্মাণ করা হয়। তাহলে আরও সমস্যা হবে। তাই সেতু নির্মাণ সাবধান হতে হবে। এছাড়া, এখন থেকে নতুন রাস্তা করার চেয়ে বিদ্যমান রাস্তাগুলো চারলেন এবং প্রশস্ত করা হবে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/রী

Share
নিউজটি ৩৮৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged