গতিশীল পুঁজিবাজারে বাড়ছে টাকার প্রবাহ

৬ পদক্ষেপে বিনিয়োগকারীদের আস্থা

সময়: বুধবার, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০ ৯:১৩:৫৭ পূর্বাহ্ণ


বিশেষ প্রতিবেদক : গেল ৪ মাস ধরে গতিশীল অবস্থায় রয়েছে পুঁজিবাজার। দৈনিক লেনদেন থেকে শুরু করে সূচক ও বাজার মূলধনে বেশ ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। অনেকগুলো ইতিবাচক সিদ্ধান্তের মধ্যে মূলত ৬টি পদক্ষেপ বর্তমান পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নতুন এক উচ্চতায়। শেয়ারের ফ্লোর প্রাইজ সম্পর্কিত নির্দেশনা জারি, বিএসইসিকে ঢেলে সাজানো, পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ এবং এককভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে কঠোর হওয়া, বিভিন্ন কোম্পানির আইপিও বাতিল করা, জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি নিয়ে নতুন নির্দেশনা, সূচকের সঙ্গে মার্জিন ঋণ প্রাপ্তির নির্দেশনা জারি ইত্যাদি পদক্ষেপে এখনো পর্যন্ত বাজারকে ঘিরে ইতিবাচক রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সারা বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ এর কবলে পড়ে হিমসিম খাচ্ছিল তখন তলানিতে পড়ে থাকা বাংলাদেশের পুঁজিবাজার আরো তলানিতে পড়ে যায়। ওই সময়ে সরকার পুঁজিবাজারের সূচক ও শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস বে‍ঁধে দেয়। শুরুতে ফ্লোর প্রাইস বিরক্তির কারণ হলেও ধীরে ধীরে বিনিয়োগকারীদের তার সঙ্গে মানিয়ে নেয়।

এরপর চলতি বছরের ১৫ মে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে ৩ দফায় দায়িত্ব পালন করা অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনের বিদায়ের পর পুঁজিবাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে গত ১৬ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিএসইসি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই পুঁজিবাজার যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়। সেই মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত বাজারের প্রতি আস্থা রেখে সক্রিয় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

এছাড়া নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ এবং এককভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে কঠোর হওয়া, বিভিন্ন কোম্পানির আর্থিক অনিয়মের কারণে আইপিও বাতিল করা, জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি নিয়ে নতুন নির্দেশনা, সূচকের সঙ্গে মার্জিন ঋণ প্রাপ্তির নির্দেশনা জারি ইত্যাদি পদক্ষেপে প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

এদিকে গেল মে মাসের শেষ দিনে অর্থাৎ ৩১ মে বাজারে দৈনিক লেনদেন হয়েছিল ১৪৩ কোটি ২৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা। এদিন বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ১৬ হাজার ১৭৬ কোটি ১৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এছাড়া ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪০৬০ পয়েন্ট। সেই ১৫০ কোটির নিচের লেনদেন বর্তমানে গড়ে হাজার কোটি টাকায় পৌছেছে। সূচক ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার ছুঁয়েছে। বাজার মূলধন প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকায় উপনীত হয়েছে।

কোভিড-১৯ অতিক্রম করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করে বাজার তার কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের ‍বিশ্বাসের প্রতিদান বর্তমান কমিশন দিচ্ছে। যদি এই ধারবাহিকতা বজায় থাকে তাহলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার অন্যান্য উচ্চতায় গিয়ে পৌছাবে। তবে ঘন ঘন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বিনিয়োগকারীদের অনেক হিমসিম খেতে হয় যা নেতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়তে পারে। তাই সবকিছু বিবেচনায় রেখে কমিশনকে এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন তারা।

 

Share
নিউজটি ৪২৭ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged