আরও একশ’ কোটি টাকা ছাড় করবে আইসিবি

সময়: শুক্রবার, অক্টোবর ৪, ২০১৯ ২:০০:৩৬ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’ থেকে আরও একশ’ কোটি টাকা ছাড় করা হবে। ঋণের জন্য আবেদন করেছে এমন ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোর মধ্যে এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে। জানা গেছে, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) তাদের সর্বশেষ ঋণের কিস্তি বাবদ ৬৬ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। এছাড়া আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে কিস্তি জমা হয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক আইসিবি-কে সর্বশেষ মোট ৮৫৬ কোটি টাকার তহবিল দিয়েছে। এর মধ্যে আইসিবি নিজে ঋণ নিয়েছে ৭৬০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। ওই টাকা থেকে প্রথম কিস্তি হিসেবে ৬৬ লাখ টাকা জমা দিয়েছে। আইসিবি নতুন করে কোনো ঋণ নিবে না বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। ফলে আইসিবি থেকে ফেরত পুরো টাকাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে মঞ্জুরি দেয়া হবে।

এর আগে বিভিন্ন আলোচনা হয়েছিল আইসিবি ঋণের সিংহভাগ টাকা নিয়ে গেছে। ফলে এবার আর আইসিবি টাকা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বেশী ঋণ পাবে। আর তহবিলটি আবর্তনশীল হওয়ায় প্রতিটি কোম্পানি যে ঋণের কিস্তি ও সুদ দেয়- সে টাকাও পুনরায় ঋণ দেয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ তহবিলটি পরিচালনার দায়িত্ব আইসিবির। এছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে একটি ঋণ তদারকি কমিটি রয়েছে। তারা সার্বিক বিষয়টি তদারকি করে।

পুঁজিবাজারে মন্দার মধ্যেও এ তহবিলটি শতভাগ ঋণ আদায় করে আসছে। বিগত দিনে কোনো প্রতিষ্ঠান খেলাপী হয়নি। সঠিক তদারকি ও যাচাই-বাছাই করে ঋণ দেয়ার কারণে শতভাগ আদায় হচ্ছে। পাশাপাশি সুদের টাকা থেকে তহবিলের আকার বাড়ছে।

এ বিষয়ে ঋণ তদারকি কমিটির আহবায়ক ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান ‘দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’-কে বলেন, ‘ব্যাংকগুলো খেলাপী ঋনের ভারে নুয়ে পড়েছে। সেখানে পুঁজিবাজারে একটি প্রশংসনীয় উদাহরণ তৈরি হয়েছে। শতভাগ ঋণ আদায় হচ্ছে। সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে ঋণ দেয়ার কারণেই শতভাগ আদায় হচ্ছে। এটি একটি দৃষ্টান্ত। পুঁজিবাজারের মন্দার মধ্যেও সবাই নিয়মিত কিস্তি দিচ্ছে।’
এদিকে ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো এ ঋণের প্রসংশা করেছে। তারা বলছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঘুরেও তারা যখন ঋণ পাচ্ছে না। ঠিক তখনই এ ঋণ পাওয়ায় তারা খুশি। তবে ঋণের পরিমাণ আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে তারা।

একাধিক ব্রোকারেজ হাউজ বলছে, তারা অনেক ব্যাংকের কাছে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে রাজি হলেও ব্যাংকগুলো টালবাহানা করছে। অনেক ব্যাংক প্রথমে রাজি হলেও পরে বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে না করে দিচ্ছে। এছাড়াও এক্সপোজার লিমিটের (একক শেয়ার ধারণসীমা) কারণে অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সহযোগী (সাবসিডিয়ারি) কোম্পানিকেও ঋণ দিতে পারছে না। ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলো চরম তারল্য সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে।

এ বিষয়ে একাধিক ব্রোকারেজ হাউজ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের সাবসিডিয়ারি থেকে ঋণের টাকা ফেরত নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। এক্সপোজার লিমিট নিয়ে তারা আতঙ্কিত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের উচিত এ মুহূর্তে একটি বড় তহবিল গঠন করে পুঁজিবাজারকে সহায়তা করা। অন্যথায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো গত কয়েক বছরের অব্যাহত লোকসানে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে ধসে পড়বে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৫৪৮ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged