উৎপাদনে যেতে ৫ দফা সময় বাড়ালো আলহাজ্ব টেক্সটাইল

সময়: সোমবার, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯ ১২:০৪:৩৫ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : নানা সংকটে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি আলহাজ্ব টেক্সটাইল। বার বার সময় নিয়েও উৎপাদন শুরু করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। উৎপাদনে যেতে এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো আরও ১৫ দিন সময় নিলো কোম্পানিটি। সে হিসেবে আজ সোমবার থেকে আগামী ৭ অক্টোবর পর্যন্ত কোম্পানিটির কারখানা বন্ধ থাকবে। তবে এ সময়ে মধ্যেও উৎপাদনে যেতে পারবে কি-না তা নিয়ে খোদ কোম্পানির কর্মকর্তারাই সংশয়ে রয়েছেন।
তথ্যমতে, নানা সঙ্কটে রয়েছে আলহাজ্ব টেক্সটাইল। এর মধ্যে চলতি মূলধন সঙ্কট, বাজারে পণ্যের চাহিদা কমায় লোকসানে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই সঙ্কটের মধ্যেই কোম্পানির কারাখানায় কিছুটা আধুনিকায়ন করার চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে মজুদ সুতা বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছে কোম্পানিটি। ফলে প্রতিষ্ঠানটি গত ২৫ জুন থেকে এক মাস সময় নিয়ে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করেছে। পরবর্তীতে কয়েকদফা সময় বাড়িয়েও উৎপাদন শুরু করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। উৎপাদন শুরু করতে ফের ১৫ দিন সময় চাইল কোম্পানিটি।
কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, আইন অনুযায়ী কোম্পানিটির উৎপাদন চালু করতে সময় বাড়াচ্ছে। তবে কারখানায় মজুদ করা সুতা বিক্রি করতে পারছে না বলে সংস্কার কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। আর এ কারণে বারবার সময় বাড়ালেও উৎপাদনে যেতে পারছে না আলহাজ্ব টেক্সটাইল। পঞ্চম দফায় সময় বাড়ালেও উৎপাদন শুরু করা যাবে কি-না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

আলহাজ্ব টেক্সটাইলের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও কোম্পানি সচিব শওকত আলী ‘দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’- কে বলেন, সঙ্কট কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে আলহাজ্ব টেক্সটাইল। কিন্তু কারখানার মজুদ পণ্য বিক্রি করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি, যা উৎপাদন চালু করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

এদিকে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ৬৯৬তম কমিশন সভায় আলহাজ্ব টেক্সটাইল এবং এর শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের মো. শামসুল হুদার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগের প্রমান পেয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে বিএসইসি যেসব প্রমান পায় সেগুলো হচ্ছে- আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মো. শামসুল হুদা ফেব্রুয়ারি মাসে ডিক্লারেশন ছাড়া ২০ হাজার শেয়ার বিক্রি করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (লিস্টিং) রেগুলেশন, ২০১৫ এর ৩৪ (১) বিধান লঙ্ঘন করেছে। তার এ শেয়ার বিক্রি করার ফলে কোম্পানির স্পন্সর ও শেয়ারহোল্ডার পরিচালকদের মোট শেয়ারহোল্ডিংয়ের পরিমাণ ৩০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে, যা বিএসইসির নোটিফিকেশন লঙ্ঘন করেছে। এছাড়া মো. শামসুল হুদা ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৪৪১টি শেয়ার বিক্রি ও ৯ হাজার ১০০টি শেয়ার ক্রয় করেছেন। ট্রেক হোল্ডার এএনএফ ম্যানেজমেন্টে কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএসই ট্রেক নম্বর- ১১৭) মাধ্যমে এসব শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করেছেন। তিনি নিজেই আলোচ্য ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এই লেনদেনর ফলে কোম্পানিটির মোট শেয়ারহোল্ডিং পজিশন ৩০ শতাংশের নিচে নেমে আসে। যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ১৪ ধারার বিধান লঙ্ঘন বলে মনে করে বিএসইসি। এই পরিচালক শেয়ার ক্রয় বিক্রয়ের বিধি-নিষেধ থাকাকালীন সময়ে শেয়ার লেনদেন করার মাধ্যমে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (সুবিধাভোগী ব্যবসা নিষিদ্ধকরণ) বিধিমালা,১৯৯৫ এর বিধি ৪ এর উপবিধি (২) এর বিধান লঙ্ঘন করেছেন। এছাড়া এছাড়া ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি কোম্পানি অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড থেকে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭৮ টাকা পাওয়া প্রসঙ্গে একটি মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করেছে, যা পরবর্তীতে সঠিক নয় বলে প্রতীয়মান হয়েছে বিএসইসি। এসব সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের অপরাধে বিষয়টি কমিশনের এনফোর্সমেন্ট বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার শেয়ার লেনদেনের স্থগিত এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ার স্পট মার্কেটে লেনদেনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৫৩০ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged