সালাহ উদ্দিন মাহমুদ : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিকখাতের ২১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১টিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ারধারণ বেড়েছে। বাকি ৮টিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ও ২টিতে বিনিয়োগ অপরিবর্তিত রয়েছে। জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে এ চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্প্রতি একটি কোম্পানির অবসায়নের ঘোষণা, কয়েকটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম, খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন ঘাটতিসহ বেশ কিছু কারণে আর্থিকখাতের কোম্পানিগুলোর ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট প্রকট ছিল। এতে করে এ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরে চরম প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে বিআইএফসি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, ইউনিয়ন ক্যাপিটালের শেয়ার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ দর হারিয়েছিল। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সেই সুযোগটি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে তুলনামূলক ভালো কোম্পানি দেখে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলেন, এমনিতেই ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর অবস্থা ভালো নয়। একটি তো অবসায়নে গেছে, আরো কয়েকটির অবস্থা নাজুক। তবে এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর তুলনামূলক কম থাকায় অনেক প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ বাড়িয়েছে।
উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে- বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টে দশমিক ২২ শতাংশ, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সে দশমিক ৫৫ শতাংশ, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিংয়ে দশমিক ১৭ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সে দশমিক ৬৮ শতাংশ, ফাস ফাইন্যান্সে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ, জিএসপি ফাইন্যান্সে দশমিক ০৪ শতাংশ, আইডিএলসি ফাইন্যান্সে দশমিক ৭৩ শতাংশ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সে দশমিক ০৫ শতাংশ, ফিনিক্স ফাইন্যান্সে দশমিক ০৮ শতাংশ, ইউনিয়ন ক্যাপিটালে দশমিক ০৪ শতাংশ এবং উত্তরা ফাইন্যান্সে দশমিক ২৪ শতাংশ শেয়ারধারণ বেড়েছে। আলোচ্য মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি শেয়ারধারণ করেছে ফাস ফাইন্যান্সের শেয়ারে। কোম্পানিটির ৪৭ লাখ ৪০ হাজার শেয়ার বা ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি ধারণ করছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
অন্যদিকে আলোচ্য মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর শেয়ারধারণ কমেছে ৮ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে। এগুলোর মধ্যে বিডি ফাইন্যান্সে দশমিক ৫১ শতাংশ, ফার্স্ট ফাইন্যান্সে দশমিক ৮৩ শতাংশ, আইসিবিতে দশমিক ০১ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে ১ দশমিক ১৮ শতাংশ, মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ে ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ে দশমিক ০৩ শতাংশ এবং ইউনাইটেড ফাইন্যান্সে দশমিক ৩২ শতাংশ শেয়ারধারণ কমেছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ারধারণ কমেছে মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ের শেয়ারে। আলোচ্য মাসে কোম্পানিটির ১ কোটি ৭৫ লাখ ৫৬ হাজার শেয়ার বা ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ শেয়ার ধারণ কমেছে। কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান, ‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে বি ক্যাটাগরিতে নেমে গেছে। এতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণ কমেছে। আর ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে ২৪ লাখ ৯৩ হাজার বা ১ দশমিক ১৮ শতাংশ শেয়ার ধারণ কমেছে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান