সালাহ উদ্দিন মাহমুদ : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৪ কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতির পূর্বে বিনিয়োগকারীর স্বার্থে প্রয়োজনীয় আইনগুলো আগে পরিপালনের নির্দেশ দিয়েছে ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন’ (বিএসইসি)। পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক আইনের আওতায় একটি সংশোধিত প্রস্তাব আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জমা দিতেও বলেছে ‘ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ’ (ডিএসই)-কে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তালিকচ্যুতির জন্য চিহ্নিত কোম্পানিগুলো হচ্ছেÑ শ্যামপুর সুগার মিলস, জিলবাংলা সুগার মিলস, বেক্সিমকো সিন্থেটিকস, শাইনপুকুর সিরামিকস, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, তুং-হাই নিটিং অ্যান্ড ডাইং, দুলামিয়া কটন, সমতা লেদার কমপ্লেস, জুট স্পিনার্স, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইমাম বাটন ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সাভার রিফ্র্যাক্টোরিজ লিমিটেড।
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর ১৪টি কোম্পানিকে কোন যুক্তিকতার ভিত্তিতে ডিএসই তালিকাচ্যুত করতে চায়Ñ এর আইনি ব্যাখ্যা চেয়েছিল ‘বিএসইসি’। এরপর গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডিএসই ওই চিঠির জবাব দেয়। ডিএসই’র জবাবের ভিত্তিতে বিএসইসি উপরোক্ত নির্দেশনা দিয়েছে।
বিএসইসি বলছে, লিস্টিং আবেদনের শর্ত অনুযায়ী কোম্পানিগুলোতে কোনো ধরনের অসঙ্গতি বা ঘাটতি কিংবা কোনো আইনের লঙ্ঘন হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে তারপর ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু ডিএসই ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯’-এর ধারা ৯-এর (৪) অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে এবং তাদের পরিচালকদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির সময়ে করা লিস্টিং চুক্তির ব্যত্যয় হলে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা কোনো মনোনীত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘স্টক এক্সচেঞ্জ লিস্টিং রেগুলেশন ২০১৫’-এর ৭ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা। তবে ডিএসই এ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে।
ডিএসই লিস্টিং রেগুলেশনস এর ৫১ (২) ধারা অনুযায়ী ট্রেড সাসপেন্ডের পরিবর্তে যদি কোনো কোম্পানির অপারেশন বন্ধ থাকে, তবে স্টক এক্সচেঞ্জ সেই কোম্পানির সার্বিক অবস্থা ৬ মাস মনিটর করবে। তবে ডিএসই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে এ আইন পরিপালন করেনি।
বিএসইসি আরও বলছে, ডিএসই ১৪ কোম্পানির মধ্যে গোয়িং কন্সার্ন থ্রেড বা ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে বলে উল্লেখ করেছে। তবে বাকি কোম্পানির ক্ষেত্রে এ আইন পরিপালন করেনি ডিএসই। এছাড়া বিএসইসির কাছে প্রতীয়মান হয় যে, স্টক এক্সচেঞ্জ এবং ইস্যুয়ার কোম্পানির সাথে করা লিস্টিং চুক্তিতে আইনগত ঘাটতি রয়েছে। ফলে লিস্টিং চুক্তির শর্ত ভঙ্গের পরও ইস্যুয়ার কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না স্টক এক্সচেঞ্জ।
বাজারসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, কোনো কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করলে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের লাভ বেশি হয়। আর বেশি ক্ষতি হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীর। তবে ডিএসই সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ প্রাধান্য না দিয়ে কাদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বা তালিকাচ্যুত করে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কেন লাভবান করছেন, সেটা বিএসইসি-কে খতিয়ে দেখতে হবে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান
চিহ্নিত ১৪ কোম্পানি
তালিকাচ্যুতির আগে প্রয়োজনীয় আইন পরিপালনের নির্দেশ
সময়: বুধবার, অক্টোবর ১৬, ২০১৯ ৯:২৫:৪১ পূর্বাহ্ণ