নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’ থেকে পুনঃঅর্থায়নের জন্য শিগগিরই আরও ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেবে ‘ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ’ (আইসিবি)। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটি আইসিবি’র নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বে শিগগিরই বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য আবর্তনশীল এ তহবিল সংক্রান্ত কমিটির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, গত মে-তে ঋণ বিতরণের জন্য আগ্রহী প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ বিতরণের আবেদন চেয়েছিল। ওই সময় যেসব প্রতিষ্ঠান ঋণ পায়নি, এমন আপেক্ষমান প্রতিষ্ঠানকে ঋণ বিতরণের জন্য বাছাই করা হবে।
এদিকে গত জুলাইয়ের শেষ দিকে ৮৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ২৭টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বিতরণ করা হয়। এছাড়া এর আগেও বেশ কিছু কোম্পানিকে ঋণ দেয়া হয়। সে সব প্রতিষ্ঠান আইসিবি-কে নিয়মিত কিস্তি দিচ্ছে। এর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান কিস্তি দিতে গড়িমসিও করছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় ঋণ দেয়ার জন্য বাছাই করা হবে না বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রটি।
এ বিষয়ে ঋণ মঞ্জুরি কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও আইসিবির উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম ‘দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’-কে বলেন, ‘এটি আবর্তনশীল একটি তহবিল। পুঁজিবাজারকে সহযোগিতা করাই মূল উদ্দেশ্য। তাই যখনই টাকা ফেরত আসবে, তখনই ছাড় করা হবে। আইসিবির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসেছেন। তার সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই কমিটির সভা আহ্বান করা হবে। যে পরিমাণ তহবিল হাতে রয়েছে, তা বরাদ্দ দেয়া হবে।’
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২২ মে ৮৫৬ কোটি টাকার তহবিল আইসিবি’কে দিয়েছে। এরপর গত ২৪ মে কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় অর্থ বিতরণের জন্য বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজের কাছে আবেদন চাওয়া হয়। ‘আগে আসলে আগে পাবে ভিত্তিতে’ অর্থ বরাদ্দ দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। মোট ৮৫৬ কোটি টাকার তহবিল দিলেও পুণঃঅর্থায়ন করার জন্য দেয়া হয়েছে ৯৫ কোটি তিন লাখ টাকা, যা পুণঃঅর্থায়ন করবে। আর ৭৬০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আইসিবি নিজে বিনিয়োগ করছে। নিয়ম অনুযায়ী, কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধনের ২০ শতাংশ ঋণ হিসেবে মঞ্জুর করা হয়। সে হিসেবে আইসিবির পরিশোধিত মূলধনের ২০ শতাংশ টাকা নিজেদের কাছে রেখেছে।
সাধারণত ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এ ঋণ পেতে পারে। আগের ঋণ পরিশোধের সুনামের ভিত্তিতে নতুন ঋণের সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া যে কোম্পানি ঋণের আবেদন করবে, তাদের কোনো পরিচালক ঋণখেলাপি হতে পারবে না। যাদের কাছ থেকে ঋণের টাকা ফেরত আসবে, তাদেরই ঋণ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
প্রসঙ্গত: পুঁজিবাজারকে সহায়তা দেয়ার জন্য সরকারের এ তহবিল থেকে যেসব প্রতিষ্ঠানকে ইতোপূর্বে ঋণ দেয়া হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের ঋণের কিস্তি থেকে প্রতিনিয়ত টাকা জমা হচ্ছে। এ তহবিলটি আবর্তনশীল হওয়ায় সেই টাকা আবারও বিতরণ করা হয়। এক্ষেত্রে শুধু বরাদ্দ দেয়ার দায়িত্বপালন করে থাকে আইসিবি। এর বাইরেও ঋণ তদারকি কমিটি রয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তত্ত্বাবধানে এ তহবিলটি পরিচালিত হয়। শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে তহবিলটি ভূমিকা রাখছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান