অগ্নিকান্ডে আরএন স্পিনিংয়ের ক্ষতি ১৬০ কোটি টাকা

পুনঃবীমা বাবদ আনুমানিক ৭০ কোটি টাকা পাবে কোম্পানিটি

সময়: সোমবার, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০ ১:৪০:৩৬ পূর্বাহ্ণ


অনুপ সর্বজ্ঞ : গত বছর কুমিল্লা ইপিজেডে অবস্থিত আরএন স্পিনিং মিলস লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটে। এতে কোম্পানির মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬০ কোটি টাকা। প্রাথমিক জরিপ শেষে পুনঃবীমাকারী প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশনকে (এসবিসি) এ তথ্য দিয়েছে আরএন স্পিনিংয়ের বীমাকারী ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
এ প্রসঙ্গে এসবিসি’র পুনঃবীমা বিভাগের উপ মহা ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিনকে বলেন, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের প্রাথমিক জরিপ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অগ্নিকান্ডের কারণে আরএন স্পিনিংয়ের মোট ১৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে এর পুরোটাই যে পুনঃবীমা কাভারেজের আওতায় আছে তা নয়। আনুমানিক ৭০ কোটি টাকা পুনঃবীমা বাবদ পরিশোধ করা হবে আরএনস্পিনিংয়ের বীমাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সেকে। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আসার পরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য ইন্স্যুরেন্সকে তাগদা দিচ্ছি।

ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তালুকদার মোহাম্মদ জাকারিয়া হোসাইন বলেন, প্রাথমিকভাবে ১৬০ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি চিহ্নিত হলেও জরিপ কার্য এখনো চলছে। আমাদের ধারণা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এর বেশি হবে না। আমরা দ্রুত চূড়ান্ত প্রতিবেদন এসবিসিতে দাখিলের চেষ্টা করছি।

গত বছরের ৮ এপ্রিলের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে আরএন স্পিনিং মিলস কারখানার মেশিন থেকে শুরু করে কাঁচামাল, সুতা, প্লান্ট, বিল্ডিং সবকিছুই পুড়ে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে যায়। কারখানাকে আবারো আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে কমপক্ষে দু’ বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে আরএন কর্তৃপক্ষ। এই সময়ের মধ্যে কোম্পানির বিল্ডিং পুন:নির্মাণ ও নতুন করে উৎপাদনে যাওয়ার জন্য নতুন মেশিনারিজ আনার ব্যবস্থা করা হবে।
জানা যায়, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ছয় মাসের বেশি উৎপাদন বন্ধ থাকায় কোম্পানিটিকে ‘এ’ থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। জেড ক্যাটাগরিতে থাকাকালীন এ কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে কোন মার্জিন সুবিধা পাওয়া যাবে না।

সর্বশেষ প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর,২০১৯) এ কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৭৫ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২৯ পয়সা। এদিকে দ্বিতীয় প্রান্তিকে এর শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এর ইপিএস ছিল ১০ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ এর শেয়ারপ্রতি নীট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৫ পয়সা।

২০১৯ সালের জন্য লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে এ কোম্পানি। এসময় শেয়ার প্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৪৭ পয়সা ও এনএভিপিএস ১ টাকা ২১ পয়সা। ২০১৮ সালে আরএন স্পিনিং বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়। সে বছর এর ইপিএস ছিল ৫৮ পয়সা ও এনএভিপিএস ১৮ টাকা ৩৪ পয়সা।

২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ৩৯২ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর পুঞ্জিভুত লোকসাসের পরিমাণ ৪০৫ কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩৯ কোটি ২৫ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৪ টি,যার মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালক ৩০ শতাংশ, প্রতিষ্ঠান ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৫৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার।

ডিএসই’তে গতকাল শেয়ারটির সর্বশেষ দর ছিল ৩ টাকা ৬০ পয়সা। দিনভর দর ৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে। সমাপনী দর ছিল ৩ টাকা ৫০ পয়সা, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল ৩ টাকা ৬০ পয়সা। এদিন ১৪৫ বারে এ কোম্পানির মোট ৩ লাখ ৯০ হাজার ৮৫১ টি শেয়ারের লেনদেন হয়।

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত একমাসে এর সর্বনিম্ন দর ছিল ৩ টাকা ২ পয়সা ও সর্বোচ্চ দর ৩ টাকা ৭০ পয়সা।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৮১ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged