নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারের বর্তমান তারল্য সঙ্কট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পুনঃবিনিয়োগ অর্থায়নের প্রায় ৮৬ কোটি টাকা ছাড়ের জন্য চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাইফুর রহমান বলেন, কমিশন প্রণোদনা স্কিমের ৮৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা অর্থ ছাড়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়া হয়েছে। যা শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আনুপাতিক হারে বন্টন করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধনের ওপর ভিত্তি করে (পরিশোধিত মূলধনের ২০ শতাংশ) ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে শেয়ারবাজার তারল্য সরবরাহ বাড়বে।
জানা যায়, ২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিটি ব্রোকারেজ লিমিটেডকে সবচেয়ে বেশি ঋণ দেয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি পাচ্ছে ১৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ পাচ্ছে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ, তারা পাচ্ছে ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এছাড়া ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ ৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ ৯ কোটি ৫৮ লাখ, বিএলআই ক্যাপিটাল ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা, এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ৭ কোটি ১৪ লাখ, বিডি সিকিউরিটিজ ৫ কোটি ৪৩ লাখ, ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্ট ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা পাচ্ছে। এর আগে ২১ মে প্রণোদনা স্কিমের ৭৬১ কোটি টাকা পেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
এদিকে চলতি বছরের শুরুতে শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও গত কয়েক মাস ধরেই নিম্নমুখী অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এমন অবস্থায় তারল্য সঙ্কট কাটাতে ২০১০ সালে ধসের ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় ৯০০ কোটি টাকা পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের ৮৫৬ কোটি টাকা চায় আইসিবি। এরই ধারাবহিকতায় গত ২ মে অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সম্মতি জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয়, চলমান শেয়ারবাজারের লেনদেনে নিম্নগতির ধারা প্রতিরোধে সুদ ও আসল হিসেবে আদায়কৃত ৮৫৬ কোটি টাকা আবর্তনশীল ভিত্তিতে পুনঃব্যবহার ও তিনটি বিষয়ের নির্দেশক্রমে অর্থ বিভাগের সম্মতি দেয়া হলো।
অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের মেয়াদ চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এই তহবিলের মেয়াদ আরো ৩ বছর বাড়ানো হয়। অর্থাৎ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হবে এবং শেষ বিতরণকৃত ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ৩১ মার্চ সময় পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় বিগত ২০১২ সালের ৫ মার্চ প্রণোদনা স্কিমের আওতায় ৯০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয়, যা তিন কিস্তিতে ৩০০ কোটি টাকা করে আইসিবির মাধ্যমে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরের মধ্যে বিতরণ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও আইসিবির সমন্বয়ে গঠিত ‘তদারকি কমিটি’ তত্ত্বাবধানে এই ফান্ড বিতরণ করা হয়। যার মেয়াদ ছিল ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তীতে কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান