ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের সঙ্কট কাটছে না। চলতি বছরের গত জুন শেষে দেশের ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৭ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে বলে অতি সম্প্রতি জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মধ্যে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৬ হাজার ৫৫ কোটি টাকা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮ হাজার ৪২ কোটি টাকা। এর বিপরীতে গত এক বছরে (জুলাই ২০১৮-জুন ২০১৯) ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আদায় করেছে মাত্র ১৬ হাজার ৮২৬ কোটি টাকা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ব্যাংকসমূহে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের মাধ্যমে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব, কর্তব্য এবং কর্মপরিধি সম্পর্কে দিক-নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকের ঝুঁকি মোকাবেলায় ১২ ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমেছে। কিন্তু কমলেও ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় নাজুক পর্যায়ে রয়েছে। একক ব্যাংক হিসেবে জনতা ব্যাংক এখনো খেলাপি ঋণের শীর্ষে। অন্যদিকে খেলাপি ঋণ বাড়ার পাশাপাশি আলোচ্য প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও ব্যর্থ হয়েছে অধিকাংশ ব্যাংক।
জানা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল) মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৬১২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত জুন শেষে এ ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৩ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমেছে ১ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে চারটিই লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণের খাত থেকেও ব্যাংকগুলোর আদায়ের পরিমাণ খুব নগণ্য বলে জানা যায়।
প্রসঙ্গ : খেলাপি ঋণ
সময়: রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০১৯ ৬:২০:৪২ অপরাহ্ণ