নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আপত্তিতে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ ইস্পাতের প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যূর পরিকল্পনা চুরান্তভাবে বাতিল হয়েছে। এর আগে কোম্পানিটি লিমিটেড প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৫০০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কোম্পানিটি এই অর্থ দিয়ে তাদের বিদ্যমান ঋণ পরিশোধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু ওই প্রস্তাবটি অনুমোদন করেনি বিএসইসি। ।
২০২৩ সালের অক্টোবরে, শেয়ারহোল্ডার ও বিএসইসির অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাব জমা দেয় কোম্পানিটি, যাতে উল্লেখ ছিল—রিডিমেবল, কিউমুলেটিভ, নন-কনভার্টেবল ও নন-পার্টিসিপেটিং প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করা হবে। তবে এক মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, এ প্রস্তাবের অনুমোদন দিচ্ছে না কমিশন।
সাধারণ শেয়ারের মতো মালিকানা অধিকার দেয় না প্রেফারেন্স শেয়ার, তবে নির্দিষ্ট হারে ডিভিডেন্ড পাওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। এছাড়া কোম্পানি দেউলিয়া হলে সম্পদ নিষ্পত্তির সময় এগুলোর অগ্রাধিকার থাকে। এসব শেয়ার সাধারণত ইপিএস গণনায় অন্তর্ভুক্ত হয় না এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্দিষ্ট সময় শেষে রিডিমযোগ্য হয়ে থাকে।
সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, জিপিএইচ ইস্পাতের দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ২৬১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি। ২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় ৪ হাজার ৫১০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি হলেও নিট মুনাফা ৫৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ কোটি ৩ লাখ টাকা।
উৎপাদন ব্যয় ও আর্থিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় মুনাফা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে কোম্পানিটি জানিয়েছে।
এর আগে, ২০২৪ সালের মে মাসে, জিপিএইচ ইস্পাতের ২৪২ কোটি টাকার রাইটস শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাবও বাতিল করেছিল বিএসইসি। কোম্পানিটি প্রতি তিনটি সাধারণ শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইটস শেয়ার ১৫ টাকা (৫ টাকা প্রিমিয়ামসহ) দামে ইস্যু করতে চেয়েছিল। কিন্তু বিএসইসি জানিয়েছিল, দাখিলকৃত ডকুমেন্টেশন যথেষ্ট সন্তোষজনক নয় এবং প্রস্তাবটি গ্রহণযোগ্য নয়।
রাইটস ইস্যুর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি নতুন উৎপাদন প্ল্যান্ট স্থাপন করতে চেয়েছিল, যার মাধ্যমে বার্ষিক ৪৫০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জনের আশা করা হয়েছিল।