নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার উন্নয়নে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগে অনুপ্রাণিত করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল আয়ে কর ছাড়ে আবেদন করেছে।
বর্তমানে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের তালিকাভুক্ত শেয়ারে ক্যাপিটাল আয়ের উপর কোন কর দিতে হয় না। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা তাদের আয়ের উপর ১০% কর আরোপ এর আগে একই সুবিধা ভোগ করত।
অর্থমন্ত্রীর কাছে সাম্প্রতিক এক চিঠিতে বিএসইসি সরকারকে ১০ % বা অন্তত ৫% কর মওকুফ করার জন্য আবেদন করেছে। যাতে ক্যাপিটাল মার্কেট আরো বেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ পায়। এতে বিএসইসি বিশ্বাস করে শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা তৈরি হবে।
বিএসইসি আরো আবেদন করেছে যে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল আয়ের উপর ১৫% কর কমিয়ে যেন ১০% করা হয়। এতে করে শেয়ারবাজারে তাদের শেয়ার বিক্রির চাহিদা কমে যাবে। এর আগে আয়ের উৎসে ১০% কর নেয়া হয়।
বন্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষিত করার জন্য বন্ডের আয়ের উপর সকল কর ছাড় দেয়ার জন্য আবেদন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সেটা যে কোন বন্ডের ক্ষেত্রে এবং যেকোন বিনিয়োগকারীর জন্য।
বর্তমানে ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত বাকি যেকোনো বিনিয়োগকারীর জন্য শুধুমাত্র জিরো কুপন বন্ডের আয়ে কর ছাড় দেয়া হয়েছে।
আবেদনে আরও আছে, বর্তমানে কর্পোরেট সেক্টরে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের জন্য ব্যাংক লোন এর পরিবর্তে বন্ড ইস্যু করার প্রতি গুরুত্ব দেয়া।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত- উল-ইসলাম কর্তৃক স্বাক্ষরিত চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ব্যাংক, বীমা এবং এনবিএফআই ব্যতীত অন্য কোনো আর্থিক সংস্থাগুলি যদি তার দীর্ঘমেয়াদী মূলধন এর কমপক্ষে অর্ধেক কর্পোরেট বন্ড ইস্যু করার মাধ্যমে সংগ্রহ করে, তাহলে আমরা তাদের কর্পোরেট করের হার ৫% কমাতে অনুরোধ করছি।
এছাড়া বিএসইসি সরকারকে তালিকাভুক্ত শেয়ার থেকে নগদ লভ্যাংশ আয়ের উৎসে কর কমানোর বিবেচনা করার অনুরোধ করেছে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারে বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়াবে।
বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের আশ্বাসও দিয়েছিলেন যে, যদি করের ছাড়ের বিষয়গুলি অনুমোদিত হয়। তবে এটি বাজার থেকে সরকারের রাজস্ব আদায়ের ক্ষতি করবে না, বরং এটি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। কারণ অনুরোধ করা পদক্ষেপগুলি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ এবং কার্যক্রমকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।
কোনও বাধ্যবাধকতা না থাকা সত্ত্বেও বিএসইসি প্রতি বছর বিনিয়োগকারীদের অ্যাকাউন্ট থেকে ২০০ টাকা সংগ্রহ করে সরকারের কাছে প্রতি বছর প্রায় ৬৫ কোটি টাকা হস্তান্তর করে। এতে বোঝা যায় যে বিএসইসি সরকারের রাজস্ব আয়ের প্রয়োজনীয়তার বোঝে।
গত এক দশকে অনেক হতাশার পরেও শেয়ারবাজার বিভিন্ন কর ও ফি আদায়ের মাধ্যমে জাতীয় কোষাগারে প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা অবদান রেখেছিল।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান