নতুন বিধি সংযোজন হচ্ছে

সাধারণ বীমায় অতিরিক্ত কমিশনে ফৌজদারী আইনে ব্যবস্থা

সময়: বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২৪, ২০১৯ ১০:২৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ


অনুপ সর্বজ্ঞ : সাধারণ বীমা খাতে ১৫ শতাংশের অতিরিক্ত কমিশন নিলে বা দিলে সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানি, গ্রাহক ও এ অসুস্থ প্রতিযোগিতার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী অপরাধি আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বীমা আইনে নতুন এ বিধিটি সংযোজন করতে যাচ্ছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

এ প্রসঙ্গে আইডিআরএ সদস্য বোরহান উদ্দীন আহমেদ ‘দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’-কে বলেন, ‘আইনে কমিশনের হার নির্ধারণ করে দেয়া আছে। কিন্তু অতিরিক্ত কমিশন দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে Ñতা বলা হয়নি। আমরা আইনে এটা সংযোজন করতে যাচ্ছি। তবে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া।’

এর আগে অতিরিক্ত কমিশন বাণিজ্য বন্ধে সাধারণ বীমা কোম্পানির প্রিমিয়ামের টাকা জমা করতে যেকোনো পৃথক তিনটি তফসিলি ব্যাংকে একটি করে সর্বোচ্চ তিনটি হিসাব রাখার নির্দেশনা দেয় আইডিআরএ।

আইডিআরএ বলছে, বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে অতিরিক্ত কমিশন দেয়ার প্রবণতা বাড়ছেই। ১০০ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই কমিশন দেয় কোনো কোনো কোম্পানি। তবে এর কোনো হিসাব নেই। এদিকে আর্থিক প্রতিবেদনে দেখানো হয় আইন মেনেই ১৫ শতাংশ কমিশন দেয়া হয়েছে। অবৈধভাবে দেয়া এই কমিশনের হিসাব মেলাতে কোম্পানিগুলো তাদের সংগ্রহ করা প্রিমিয়াম প্রদর্শন করে না। কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ পলিসি করে, কাগজপত্রে তার অর্ধেকেরও কম দেখানো হয়। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পলিসির তথ্য গোপন রেখে তৈরি করা হয় আর্থিক প্রতিবেদন। এক্ষেত্রে কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। এসব হিসাবের মাধ্যমেই পরিশোধ করা হয় অতিরিক্ত কমিশনসহ কোম্পানির নানা ধরনের অবৈধ ব্যয়ের অর্থ। বীমাখাতে এ ধরনের দুর্নীতি বন্ধের উদ্দেশ্যেই প্রিমিয়াম জমাকরণে তিনটির অতিরিক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধের উদ্যেগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আইডিআরএ।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, মূলধন সংরক্ষণের জন্য একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং অন্যান্য আয় জমাকরণের জন্য অপর একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রাখা যাবে। এছাড়া দাবি পরিশোধের জন্য একটি ও ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের জন্য একটি ব্যাংক হিসাব রাখা যাবে। সেক্ষেত্রে প্রিমিয়াম জমাকরণ হিসাব থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ ওই হিসাব দুটিতে ট্রান্সফার করে নিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বীমা দাবি, কমিশন ও বেতন-ভাতাদির টাকা নগদে পরিশোধ করা যাবে না।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শাখা কার্যালয়ের খরচ নির্বাহের ক্ষেত্রে প্রতিটি শাখায় একটি করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রাখা যাবে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রিমিয়াম হিসাব থেকে ক্রসড চেক বা ফান্ড ট্রান্সফার ছাড়া অন্য কোনো অর্থ ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করা যাবে না। শাখা কার্যালয়ের অন্য যে কোনো আয়, কমিশন ফেরত ইত্যাদি ব্যাংক হিসাবে জমাকরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

বীমা খাতে অবৈধ কমিশন বন্ধ হলে দেশের বীমা কোম্পানিগুলোর আয় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই এই অবৈধ কমিশন বন্ধ একজোট হয়েছেন বীমা মালিকরা। নন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ১৫ শতাংশের অধিক কমিশন দিলে প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়েছে বীমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। আর পর্যায়ক্রমে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর কমিশন প্রদানের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আনা হবে বলে জানিয়েছেন বীমা মালিকরা।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৬০ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged