১৪২ জনের নবায়ন বোনাস নিয়ে হাইকোর্টের রুল

সোনালী লাইফের বরখাস্ত কর্মকর্তাদের পুনর্বহালসহ কয়েক দফা দাবিতে বিক্ষোভ

সময়: বুধবার, জুলাই ১০, ২০২৪ ১২:২৫:৪২ অপরাহ্ণ


বিশেষ প্রতিবেদক: বরখাস্তকৃত শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া, প্রশাসকের পদত্যাগ, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা দ্রুত পরিশোধসহ ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট করেছেন সোনালী লাইফের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে আগত মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা অবস্থান নিয়ে এই বিক্ষোভ করেন। এ সময় কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে কোম্পানিটিতে আইডিআরএ নিযুক্ত প্রশাসক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফেরদৌসের কাছে ছয় দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি দেন মাঠ কর্মীরা। এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

স্মারকলিপিতে গত দুই মাসে প্রশাসকের নেওয়া নানা পদক্ষেপকে ‘অনৈতিক, অনভিপ্রেত, দূরভীসন্ধিমূলক’ মন্তব্য করে এতে সোনালী লাইফ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বলে অভিযোগ করেন মাঠ কর্মীরা।
স্মারকলিপিতে তারা বলেন, সোনালী লাইফের সকল এফএ, ইউএম ও বিএমদের বকেয়া পাওনা দ্রুত পরিশোধ করতে হবে।; নিরপেক্ষ অডিট কোম্পানি দিয়ে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ অডিট সম্পন্ন করে রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে; স্যালারি পলিসি কার্যকর করার ক্ষেত্রে অন্যান্য জীবন বীমা কোম্পানির প্রচলিত সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় রেখে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিয়ম যথাযথ প্রতি পালন সাপেক্ষে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে; মিথ্যা, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহিল কাফী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা, সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মো. আজিম এবং সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদকে দ্রুত পদে বহাল করতে হবে, প্রধান কার্যালয়ের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে অস্ত্রধারী আনসার সদস্যদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে এবং আইডিআরএর’র প্রশাসক নিয়োগপত্রের ৯৫(৯) ধারার বাইরে স্বেচ্ছাচারী কোনো পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা যাবে না। ইচ্ছামত নিয়োগ ও বরখাস্ত বন্ধ করতে হবে।

এর আগে রোববার কোম্পানির শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেন প্রশাসক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফেরদৌস। তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সনদ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়। এরপর গতকাল মঙ্গলবার দাবি-দাওয়া আদায়ে জমায়েত হন সোনালী লাইফের কর্মকর্তারা।

এ সময় বক্তব্য দেন সোনালী লাইফের এসিসট্যান্ট ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (এএমডি) সাহেল রহমান। তিনি বলেন, সোনালী লাইফের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গ্রাহকের কোন অভিযোগ নেই। সঠিক সময়ে গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। অথচ গ্রাহক স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে সোনালী লাইফে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে আইডিআরএ।
তিনি আরও বলেন, সোনালী লাইফকে ধংস করার জন্য কর্মীদের বেতন-ভাতা বন্ধ করা হয়েছে, সেলস পলিসি বন্ধ করা হয়েছে। প্রশাসকের অদক্ষতার কারণে সোনালী লাইফের ব্যবসা অর্ধেকে নেমে এসেছে।

সাহেল রহমান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই সমাবেশ করছি। প্রশাসককে অমান্য করার এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের যে অভিযোগ আনা হয়েছে সে আইন প্রশাসক নিজেই তৈরি করেছেন।

তিনি আইডিআরএ’র আইনের বাইরে গিয়ে আমাদেরকে ছাঁটাই করছেন। আরও বক্তব্য দেন কোম্পানির এসিসট্যান্ট ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (এএমডি) আরেফিন বাদল রনি। তিনি বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। সেলস পলিসি ও বেতন-ভাতাও বন্ধ করা হয়েছে অবৈধভাবে।

অপরদিকে, বীমা আইন ২০১০ এর ৫৮ ধারা অনুযায়ী সোনালী লাইফের ১৪২ জন মাঠ কর্মকর্তার রিনিউয়াল কোয়ার্টার বোনাস প্রদানে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩ জুলাই এই রুল জারি করেন। আইডিআরএ চেয়ারম্যান, পরিচালক (আইন) ও সোনালী লাইফে নিযুক্ত প্রশাসককে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

Share
নিউজটি ২১৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged