নিজস্ব প্রতিবেদক : মন্দা পুঁজিবাজারে দুই কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এ কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কোম্পানি দু’টিকে নোটিস দিয়েছে। নোটিসের জবাবে কোম্পানি দু’টির পক্ষ থেকে ডিএসইকে জানানো হয়েছে, অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির পেছনে কোনো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই। ফলে কোম্পানি দু’টি সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে ডিএসই এ বার্তা দিয়েছে। কোম্পানি দু’টি হলো- প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ও স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক।
তথ্যমতে, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের গতকাল সর্বশেষ ২৪ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর কোম্পানির শেয়ার ১৮ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়। এরপর থেকে অধিকাংশ সময় বেড়েছে কোম্পানির শেয়ার দর। ১২ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়েছে ৬ টাকা ৫০ পয়সা। এভাবে দর বাড়ায় ডিএসই থেকে কোম্পানিটিকে নোটিস দেয়া হয়। নোটিসের জবাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডিএসইকে জানায়, দর বাড়ার কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। আর তাই বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতে কোম্পানির দেয়া তথ্য প্রকাশ করছে ডিএসই। এরপরও কোম্পানিটির শেয়ারের দর বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত হিসাব বছরের পর থেকে কোম্পানিটি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠনিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির ২৭ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার ছিল। চলতি বছরের আগস্ট শেষে প্রাতিষ্ঠনিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ শেয়ার আছে। অর্থাৎ ৮ মাসে কোম্পানিটির প্রায় ১৯ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দিয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
৬০ কোটি টাকার অনুমোদিত মূলধনের এ কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৩৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৩২ লাখ ২৩ হাজার ১২টি। এর মধ্যে ৪২ দশমিক ৭৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৩ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ শেয়ার আছে।
এদিকে, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের শেয়ার গতকাল সর্বশেষ ৬২৬ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর কোম্পানির শেয়ার দর ছিল ৩৯৪ টাকা ১০ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ২৩২ টাকা ৮০ পয়সা। কোম্পানির শেয়ার দর টানা বাড়ায় বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে করে কোম্পানিকে নোটিস দেয় ডিএসই। তার জবাবে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দর বাড়ার কোনো ধরনের মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই। আর এ বিষয়টিও বিনিয়োগকারীদের জন্য বার্তা হিসেবে প্রকাশ করেছে ডিএসই।
কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। স্বল্পমূলধনী এ কোম্পানিটির দর অস্বাভাবিক বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মূল্যসংবেদনশীল তথ্য না থাকার পরও দর বাড়ার বিষয়টি প্রকাশ করে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক বার্তা দিয়েছে ডিএসই। কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৬৪ লাখ ৬০ হাজার ৬৫০টি। এর মধ্যে ২৮ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৬৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান