সার্কিট ব্রেকার নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি

ক্ষতিগ্রস্ত এডিএন টেলিকমের শেয়ারহোল্ডাররা

সময়: বুধবার, জানুয়ারি ৮, ২০২০ ১১:৫৭:১৩ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : সার্কিট ব্রেকার নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ করেছেন এডিএন টেলিকমের প্রাথমিক গণ-প্রস্তাব (আইপিও) শেয়ারপ্রাপ্তরা। তারা বলছেন, স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সিদ্ধান্তহীনতার কারণে সবাই সর্তকতার সঙ্গে লেনদেন করেছেন। ফলে দ্বিতীয় দিন দাম বাড়ার সুযোগ থাকলেও লেনদেন শেষে মূল্যস্তর আগের দিনের অবস্থানেই রয়ে গেছে।

বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে আসা নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি এডিএন টেলিকমের প্রথম দিন সার্কিট ব্রেকার স্পর্শ করলেও দ্বিতীয় দিন আগের কার্যদিবসের ক্লোজ প্রাইস ৪০ টাকা ৫০ পয়সায় অপরিবর্তিত ছিল। আইপিওধারীরা বলছেন, প্রথম দিন সার্কিট ব্রেকার নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা থাকায় বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে দ্বিতীয় দিন লেনদেনের আগ্রহে ভাটা পড়ে। সাধারণত যে কোনো কোম্পানির প্রথম দু’দিন শেয়ার দর ভাল থাকে। সার্কিট ব্রেকার থাকার পরও রিং শাইন দু’ দিনই সর্বোচ্চ দর বা সার্কিট ব্রেকার স্পর্শ করে।

এদেিক গত সোমবার এডিএন টেকিমের প্রথম লেনদেন হয়। ওই দিন দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ প্রথমে ৩০ টাকা ভিত্তি মূল্য ধরে সার্কিট ব্রেকার আরোপ করেছিল। পরে লেনদেন শুরুর আগ মুহূর্তে সেটি পরিবর্তন করে ২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অবশ্য ২৭ টাকাই সঠিক ছিল। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সিদ্ধান্তহীনতার কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বিনিয়োগকারীরা।

জানা গেছে, কোম্পানির অর্থ উত্তোলনের জন্য বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে ইস্যু মূল্য নির্ধারণের জন্য যোগ্য বিনিয়োগকারীদের বিডিংয়ের অনুমোদন প্রদান করা হয়েছিল। যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বিডিংয়ের মাধ্যমে কোম্পানির প্রতিটি শেয়ার ৩০ টাকায় প্রান্ত-মূল্য (কাট অফ প্রাইস) নির্ধারণ করে। সে অনুযায়ী এক কোটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার সাধারণ শেয়ার ৩০ টাকা মূল্যে যোগ্য বিনিয়োগকারী ও ২৭ টাকা মূল্যে (কাট-অফ মূল্য থেকে ১০ শতাংশ বাট্টায়) ৭৯ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৬টি সাধারণ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীর (অনিবাসী বাংলাদেশিসহ) নিকট ইস্যুর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন।

কিন্তু প্রথম দিন লেনদেনে ৩০ টাকা নাকি ২৭ টাকা নির্ধারিত হবে এটি নিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম উভয় স্টক এক্সচেঞ্জই প্রথমে ভুল করেছিল। প্রথমে ৩০ টাকা মূল্যের ওপর ৫০ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার দিয়ে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করে। পরে লেনদেন শুরুর এক মিনিট আগে তা সংশোধন করে ২৭ টাকার ওপর সার্কিট ব্রেকার বসায়। গত সোমবার প্রথম দিন ৪০ টাকা ৫০ পয়সা অর্থাৎ সার্কিট ব্রেকারে স্পর্শ করে লেনদেন শেষ হয়। গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন শেষেও ৪০ টাকা ৫০ পয়সায় অপরিবর্তিত ছিল।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর উচিত ছিল বিষয়টি আগেই সুরাহা করা। এভাবে হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। স্টক এক্সচেঞ্জ যদি সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত না নিতে পারে- তাহলে বিনিয়োগকারীরাও সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবেন। দ্বিতীয় দিন শেষে সেই আতঙ্কই বাস্তব হলো।

জানা গেছে, গত বছরের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইপিও’তে আসা কোম্পানির লেনদেন শুরুর দিনে ইস্যু মূল্যের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দর বাড়তে পারবে। দ্বিতীয় দিন প্রথম দিনের ক্লোজ প্রাইজের ৫০ শতাংশ বাড়তে পারবে। তৃতীয় দিন থেকে অন্যান্য কোম্পানির মতো সার্কিট ব্রেকার প্রযোজ্য হবে।

গত ২৮ নভেম্বর কোম্পানির লটারির ড্র অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় এবং ৪ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করে। গত ৩ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন করেছে বিএসইসি।

পুঁজিবাজার থেকে এডিএন টেলিকম ৫৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে এক কোটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার শেয়ার ৩০ টাকা দরে বিক্রি করে ৩৫ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়। বাকি ২১ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৯৮২ টাকা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭৯ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৬টি শেয়ার ২৭ টাকা দরে বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।

আইপিও’র মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ কোম্পানিটি ভৌত কাঠামো উন্নয়ন, ডাটা সেন্টার স্থাপন, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৫৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged