২৭ কোম্পানির আইপিও : নতুন আবেদনের প্রয়োজন হবে না, অর্থ উত্তোলনের সীমা শিথিল

সময়: সোমবার, জুলাই ২৯, ২০১৯ ৫:৫৭:১৫ পূর্বাহ্ণ


সালাহ উদ্দিন মাহমুদ : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য আবেদনকৃত ২৭টি কোম্পানিকে নতুন করে আর আবেদন করতে হবে না। সংশোধিত নিয়মে কোম্পানির উত্তোলন করা অর্থের ওপর যে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে, তা থেকে কোম্পানিগুলোকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে কোম্পানিগুলোর আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়া সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস্্ অনুযায়ী-ই হবে। উল্লেখিত বিষয়টি ছাড়া সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস্্ে অন্য যা যা পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেগুলোর সবই কোম্পানিগুলোকে পরিপালন করতে হবে। তবে সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস্্ের গেজেটে ২৭ কোম্পানির আইপিও’র বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করা হবে না। এছাড়া বিডিং প্রক্রিয়ায় থাকা অপর দুটি কোম্পানি ক্ষেত্রে নতুন আইন পরিপালন করা হবে। সংশোধিত আইনে কোম্পানিগুলোর আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, কোনো আইনকে বাতিল করা হলে ওই আইনে কোনো কিছু চূড়ান্ত করা আইনসম্মত নয়। কোম্পানিগুলোকে আইনসম্মতভাবে আইপিও অনুমোদন করতে হলে সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস্্ অনুযায়ী করতে হবে। সেক্ষেত্রে অভিহিত মূল্যের পাবলিক ইস্যুর পরিমাণ ৩০ কোটি টাকা এবং বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে পাবলিক ইস্যুর পরিমাণ ৭৫ কোটি টাকার রুলস্্ থেকে ২৭ কোম্পানিকে অব্যাহতি দেয়া হবে। এখন কোম্পানিগুলো তাদের সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেবে। নতুন করে আবেদনের প্রয়োজন পড়বে না।
সূত্র জানায়, সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস্্ে আর যা যা পরিবর্তন আনা হয়েছে, তার সবই কোম্পানিগুলোকে পরিপালন করতে হবে। আর বিডিং প্রক্রিয়ায় থাকা দুটি কোম্পানি ক্ষেত্রেও নতুন আইন পরিপালন করা হবে। অর্থাৎ বিডিং বা নিলামের জন্য যে কাজ বাকি রয়েছে তা নতুন আইনে করতে হবে। তবে সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস্্ের গেজেটে ২৭ কোম্পানির আইপিও নিয়ে কিছু উল্লেখ থাকবে না। চলতি বছরের ২৯ এপ্রিলের আগে বিএসইসি’তে ২৭টি কোম্পানির আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৯ কোম্পানি বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে এবং বাকি ১৮টি কোম্পানি স্থির মূল্য পদ্ধতিতে বাজারে আসতে আগ্রহী।

বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে আইপিও-তে আসতে আগ্রহী কোম্পানিগুলোর মধ্যে ডেল্টা হসপিটাল ৫০ কোটি টাকা তুলবে আর এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন তুলবে ১৪৯ কোটি ৮৬ টাকা। তাছাড়া স্টার সিরামিকস ৬০ কোটি টাকা তুলবে। এছাড়া বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে বারাকা পতেঙ্গা ২২৫ কোটি টাকা, লুব-রেফ বাংলাদেশ ১৫০ কোটি টাকা, আমান টেক্স ২০০ কোটি টাকা, মীর আখতার হোসেন লিমিটেড ১২৫ কোটি টাকা, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ ১০০ কোটি টাকা এবং ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ৫০ কোটি টাকা তুলবে। আর বুকবিল্ডিংয়ে বিডিং প্রক্রিয়ায় রয়েছে আরো দু’টি কোম্পানি। তার মধ্যে এডিএন টেলিকম ৫৭ কোটি টাকা এবং পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ৭০ কোটি টাকা তুলবে।
এদিকে অভিহিত বা স্থির মূল্য পদ্ধতিতে আইপিও-তে আসতে আগ্রহী কোম্পানিগুলোর মধ্যে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ২৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা তুলবে। আর ইলেক্ট্রো ব্যাটারি কোম্পানি তুলবে সাড়ে ২২ কোটি টাকা। তাছাড়া দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ১৬ কোটি টাকা, ক্রিস্টল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ১৬ কোটি টাকা, আল-ফারুক ব্যাগস ৩০ কোটি টাকা, বিডি পেইন্টস ২০ কোটি টাকা, ই-জেনারেশন ১৫ কোটি টাকা, এসএফ টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ ১৮ কোটি টাকা, বনিতো অ্যাক্সেসরিজ ইন্ডাস্ট্রিজ ৩০ কোটি টাকা, পিইবি স্টিল অ্যালায়েন্স ১৫ কোটি টাকা, আসিয়া সি ফুড ২০ কোটি টাকা, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ১৯ কোটি টাকা, বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ১৫ কোটি টাকা, এএফসি হেল্থ ১৭ কোটি টাকা, ওরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ২৫ কোটি টাকা, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন ১৫ কোটি টাকা, গার্ডেনিয়া ওয়ার্স লিমিটেড ২০ কোটি টাকা এবং হজ ফাইন্যান্স কোম্পানি ১৫ কোটি টাকা তুলবে।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল বিএসইসি সিদ্ধান্ত নেয় যে, ২৯ এপ্রিলের পর আর কোনো নতুন কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন গ্রহণ করা হবে না। কারণ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস্্, ২০১৫ এর সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে বলা হয়, ইতোমধ্যে যেসব কোম্পানির আইপিও আবেদন জমা পড়ে আছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিবেচনা করা হবে। অর্থাৎ আইপিও’র জন্য আবেদন দাখিল করা কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে আগের নিয়মেই অনুমোদন দেয়া হবে।

ইতোমধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর (ইআই) কোটা কমিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীর বাড়িয়ে পাবলিক ইস্যু রুলস্্ের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। সংশোধিত রুলস্্ে বলা হয়েছে, আইপিও’তে ইআই হিসেবে কোটা সুবিধা গ্রহণ করতে হলে কমিশন কর্তৃক নির্দিষ্ট অঙ্কের সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ থাকতে হবে। স্থির মূল্য পদ্ধিতে পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে ইস্যুয়ার কোম্পানির এক বছরের পজিটিভ নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর শর্তটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া অভিহিত মূল্যের পাবলিক ইস্যুর পরিমাণ কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা এবং বুকবিল্ডিং এর মাধ্যমে পাবলিক ইস্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ হবে কমপক্ষে ৭৫ কোটি টাকা।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৫২৩ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged