আইপিও’র ৭৭ শতাংশ অর্থই অ-ব্যবহৃত

আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় চায় ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং

সময়: সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯ ১১:১৪:১৭ পূর্বাহ্ণ


সালাহ উদ্দিন মাহমুদ : নির্ধারিত সময়ে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অর্থ ব্যবহারে ব্যর্থ হয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ‘ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড’। গত ১৮ আগস্ট কোম্পানিটির আইপিও অর্থ ব্যবহারের সময়সীমা শেষ হয়েছে। আলোচ্য সময়ের মধ্যে কোম্পানিটি উত্তোলিত অর্থের ২২ দশমিক ৮৮ শতাংশ অর্থ ব্যবহারে সক্ষম হয়েছে। অর্থাৎ আইপিও’র অর্থ অব্যবহৃত রয়ে গেছে ৭৭ শতাংশেরও বেশি। এমতাবস্থায় আইপিও’র অবশিষ্ট অর্থ ব্যবহারে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় চেয়েছে কোম্পানিটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, ৩০ জুলাই ২০১৯ পর্যন্ত কোম্পানিটি আইপিও অর্থের মোট ৬ কোটি ৮৬ লাখ ৫২ হাজার ৩৬৭ টাকা বা ২২ দশমিক ৮৮ শতাংশ খরচ করেছে। তবে এখনো ৭৭ দশমিক ১২ শতাংশ বা ২৩ কোটি ১৩ লাখ ৪৭ হাজার ৬৩৩ টাকা খরচ করতে পারেনি। আর গত জুলাই মাসের হিসাবে দেখা গেছে, কোম্পানিটি তার আইপিও বাবদ ২ কোটি ৪ লাখ টাকা ও ফ্রেইড এবং অন্যান্য ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে। তবে কারখানা শেড, স্টোর রুম ও অফিস ভবন নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। যার মধ্যে খরচ হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার টাকা। অবশিষ্ট রয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। আর জেনারেটরসহ ইলেক্ট্রিক সরঞ্জামাদি কিনতে বরাদ্দ ছিল ৭১ লাখ ৫১ হাজার ২০০ টাকা। তবে পুরোটাই অর্থ এখনও খরচ করতে পারেনি ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া এলপিজি স্যাটেলাইট প্লান্টে বরাদ্দ ছিল ৯ কোটি ৭৪ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। তবে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ২০৭ টাকা। বাকি রয়েছে ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৩ টাকা। আর সিলেন্ডার, রোড ট্যাঙ্কার, মুভার ওয়েটিং ব্রিজ এবং ট্রাক কেনা বাবদ বরাদ্দ ছিল ১৫ কোটি ৭৪ লাখ ৫ হাজার টাকা। তবে এখানে কোম্পানিটি খরচ করেছে ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৬০ টাকা। অবশিষ্ট ১৫ কোটি ১০ লাখ ৬০ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ করতে ব্যর্থ হয়েছে কোম্পানিটি।

কোম্পানির আইপিও তহবিল থেকে এখন পর্যন্ত সুদ বাবদ আয় এসেছে ৬৫ লাখ টাকা। এখন আইপিও এবং সুদ মিলে কোম্পানির কাছে মোট ২৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৬৩৩ টাকা রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে কোম্পানি সচিব জিএম সালাউদ্দিন ‘দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’কে বলেন, আমাদের এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খুলতে দেরি হচ্ছে। কারণ আমরা বিভিন্ন সেগমেন্টে আইপিও অর্থ ব্যবহার করছি। এর জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদন নিতে হচ্ছে। এতে আমাদের সময় লেগে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আগামী মাসে হয়তো কোম্পানির এজিএম (বার্ষিক সাধারণ সভা) অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে শেয়ারহোল্ডারদের কাছে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হবে। শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন সাপেক্ষে কোম্পানি বাকি কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি ৬২৪তম কমিশন সভায় ইন্ট্রকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এদিকে, কোম্পানিটির মোট রিজার্ভ রয়েছে ১৭ কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ রয়েছে ৩ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির বর্তমান পিই রেশিও ১৬ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট, ডায়লোটেড ইপিএস অনুয়ায়ী পিই রেশিও ২৫ দশমিক ০৭ পয়েন্ট এবং সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির বর্তমান পিই রেশিও ১৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট।
৩০ জুন ২০১৮ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ শুপারিশ করে। এসময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয় ১ টাকা ১৫ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ১২ টাকা ৮৪ পয়সায়। আর ৯ মাসে (জুলাই,১৮-মার্চ,১৯) কোম্পানির শেয়ার প্রতি সমন্বিত আয় হয়েছে ৭৫ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে আয় ছিলো ৬৬ পয়সা। আর ৩ মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২৪ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে আয় ছিলো ২৭ পয়সা। এসময়ে কোম্পানির এনএভি হয়েছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা।

‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ২০১৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩০ দশমিক ৪৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকের কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ শেয়ার এবং ৪৯ দশমিক ০৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৮৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged