একনেকে সোয়া ৩ হাজার কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন

সময়: বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯ ১০:২৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য নোয়াখালীর ভাসানচরে অবকাঠামো তৈরির লক্ষ্যে আশ্রয়ন-৩ প্রকল্প (সংশোধিত) অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর পাশাপাশি আরও আটটি প্রকল্প (সংশোধিত ও নতুন) অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যার পুরোটাই সরকার বহন করবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন, শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য শাহিন আহমেদ এবং ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গীস।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, ‘দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি আরবি, ফারসি, জাপানি, স্প্যানিশ ভাষা শেখার ওপর জোর দেয়ার জন্য আইসিটি বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে তারা দু’টি ভাষা শেখাচ্ছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এমনিতেই অনেক জায়গায় প্রিপেইড মিটার স্থাপিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুতের দায়িত্বে আছেন। বিদ্যুতের বিলের বিষয়ে প্রায়ই সমস্যা হয়। শিগগিরই জাতীয় সংসদের সব ভবনে প্রি-পেইড মিটার লাগানোর কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি অফিস-আদালত ও বাসভবনসহ সর্বত্র প্রি-পেইড মিটার লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা মনে করি, এটি দরকার। জনগণের যদি প্রি-পেইড মিটারে বিল দেয়ার সক্ষমতা থাকে, তাহলে সংসদ ভবন দেবে না কেন। এমনিতেই আমরা সারাদেশে প্রি-পেইড মিটার দেবো।’
বড় বড় সেতু বানালে ক্ষতি হয়। সেতু বানানোর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী তাগিদ দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
এম. এ. মান্নান বলেন, ‘আশ্রয়ন-৩ প্রকল্পের মূল ব্যয় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৩১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। পরবর্তী পর্যায়ে ৭৮২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে এখন মোট ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারিত হয়েছে ৩ হাজার ৯৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানাধীন চরঈশ্বর ইউনিয়নের ভাসানচরে মিয়ানমারের এক লাখ নাগরিকের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও বনায়ন করা হবে। এছাড়া দ্বীপটির নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও নির্মাণ করা হবে।’
সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পের জন্য খরচ বাড়ানো হয়েছে ৭৮২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এছাড়া খাদ্যশস্যের পুষ্টিমান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রিমিক্স কার্নেল মেশিন ও ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা; শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৩৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা; আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৪০ কোটি ২৭ লাখ টাকা; দিঘলিয়া-আড়ুয়া-গাজীরহাট-তেরখাদা সড়কের প্রথম কিলোমিটারে ভৈরব নদীর ওপর ভৈরব সেতু নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
পাশাপাশি সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর-ধুনট-শেরপুর এবং সিরাজগঞ্জ-ধুনট মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্তকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯৮৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এদিকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন, সংসদ সদস্য ভবন ও এমপি হোস্টেল আনুষঙ্গিক স্থাপনার নির্মাণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৩৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা; বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪৭৬ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged