পুঁজিবাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক তফসিলি ব্যাংকগুলোকে সাময়িক তারল্য সুবিধা প্রদানের ঘোষণায় দু’দিন সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলেও পুনরায় নেতিবাচক অবস্থানে ফিরে গেছে বাজার। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, ‘টোটকা ওষুধে’ সাময়িক কয়েকদিন বাজার ভাল যেতে পারে, কিন্তু এতে বাজারের প্রকৃত গতি ফিরবে না; বাজার স্থিতিশীল হবে না এবং বিনিয়োগকারীদেরও আস্থা ফিরবে না। পুঁজিবাজারের মোড় ঘোরাতে হলে এর মূল সমস্যায় দৃষ্টি দিতে হবে। ত্বরিত এমন কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসে এবং বাজারও স্থিতিশীল হয়। একই সঙ্গে বাজার সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকেও আরও গতিশীল হতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় করতে হবে।
প্রসঙ্গত: মন্দা বাজারের গতি ফেরাতে সম্প্রতি পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজারের বর্তমান মূল সমস্যা এবং সেগুলো সমাধানে সরকারের করণীয় বিষয়ে গণমাধ্যমে তেমন কিছু না বললেও পুঁজিবাজার নিয়ে সরকারের প্রত্যাশার কথা বলেছেন এবং বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করার লক্ষ্যে দুয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন।
ওইদিন বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বাজারে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা দূর করা হবে। যাতে করে পুঁজিবাজার দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল থাকে। আমরা পুঁজিবাজারে সুশাসন এবং অর্থনীতির সাথে ভারসাম্য রেখে পুঁজিবাজারকে গতিশীল দেখতে চাই।’
এদিকে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ওইদিন বৈঠক শেষে পুঁজিবাজারের বর্তমান মন্দাবস্থার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাংবাদিকদের চারটি কারণের কথা জানিয়েছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও বিএসইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। সেগুলো হচ্ছে- বাজারে ভালো আইপিও না আসা, নিরীক্ষা প্রতিবেদন নির্ভরযোগ্য না হওয়া, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা ও ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থা।
পুঁজিবাজার নিয়ে অর্থমন্ত্রীর ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় পুঁজিবাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে সাময়িক তারল্য সুবিধা প্রদানে গত রোববার এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রসঙ্গত: চলমান পুঁজিবাজারের মন্দা পরিস্থিতির জন্য ‘তারল্য সঙ্কট’ একটি অন্যতম কারণ বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ ঘোষণায় মাত্র দু’দিন বাজার উর্ধ্বমুখী ছিল। তবে এটি বাজারে কতটা প্রভাব ফেলবে কিংবা আদৌ ফেলবে কি নাÑ সেটি এখনো বলা যাচ্ছে না।