শিল্পে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সমাধানে শিগগির কমিটি হচ্ছে

সময়: রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯ ১০:৫৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : দুই সপ্তাহের মধ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সমস্যা নিরসনে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল শনিবার দুপুরে বিদ্যুৎ ভবনে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমস্যা সমাধানে আয়োজিত এক সেমিনার শেষে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে কমিটি গঠন করা হবে। দুই মাসের মধ্যে কমিটিকে সরকারের কাছে সুপারিশ উপস্থাপন করতে হবে। আর আট থেকে দশ মাসের মধ্যে সরকার সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে।
এদিকে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও শিল্প মালিকরা নিজস্ব ক্যাপটিভ বিদ্যুতে প্রয়োজন মেটাচ্ছে। এতে গ্রিডের বিদ্যুৎ অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। যা এখন সরকারের বড় মাথাব্যথার কারণ। সরকার দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, শিল্পে এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা গেলে সঙ্কট সামাল দেয়া সহজ হতো। কিন্তু ব্যবসায়ীরা নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের নিশ্চয়তা চাইছে। কিন্তু সরকারের পক্ষে তা এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহৎ পরিসরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ। বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল (বিইপিআরসি) এই খাতের উন্নয়নে সমস্যা ও বাধা গবেষণার মাধ্যমে চিহ্নিত এবং তা নিরসনে সরকারকে পরামর্শ দিতে এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহি চৌধুরী (বীরবিক্রম) বলেন, শিল্প উদ্যোক্তাদের ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি ব্যবহারে আরো সাশ্রয়ী হতে হবে। এজন্য কেন্দ্রগুলোকে কো-জেনারেশন অর্থাৎ কেন্দ্রগুলো থেকে যে তাপ নির্গত হবে, সেই তাপ পুনর্ব্যবহার করতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের একটি কমিটি গঠন করে মানোন্নয়নের নির্দেশ দেন। এই কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানের পর বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিপু জানান, বিইপিআরসির চেয়ারম্যান হবেন এই কমিটির প্রধান। আর কমিটিতে বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ, স্রেডা এবং বেসরকারি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো থেকে প্রতিনিধি থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ২৪ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ দিতে চাই। সেজন্য কাজ করা হচ্ছে। তবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে গিয়ে আমরা আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, চট্টগ্রামে কিছু সমস্যা দেখছি। এতে এখন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার, যা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে অনেকখানি সহায়ক হবে। এছাড়া সরকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এতে দুই-তিন বছরের মধ্যে পরিস্থিতি বদলে যাবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যৎ জ্বালানির মূল্য সম্পর্কে আগাম ধারণা চেয়েছে। আমরা দেখছি, কীভাবে এই ধারণা দেয়া যেতে পারে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এখন সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে চার হাজার কোটি টাকার গ্যাসের বিল বকেয়া রয়েছে। এ বকেয়া পরিশোধে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সহযোগিতা চেয়েছে সরকার। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো আমাদের আশস্ত করেছে বকেয়া বিল পরিশোধে তারা সহযোগিতা করবে।
সেমিনারে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকনসহ সংগঠনের ছয়জন প্রতিনিধি, তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল সামাদসহ পাঁচজন প্রতিনিধি অংশ নেন। অন্যদিকে বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, স্রেডার চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিনসহ বিতরণ কোম্পানিগুলোর দুইজন করে প্রতিনিধি সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪০১ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged