নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যবস্থাপনা বাবদ ২০১৮ সালে গ্রস প্রিমিয়াম আয়ের তুলনায় ৮০ দশমিক ৮৭ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যয় করেছে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকেও ৬১ দশমিক ৩৩ অতিরিক্ত ব্যয় করেছে কোম্পানিটি। চার্টার্ড লাইফের ব্যবসায়িক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এমন চিত্রই উঠে আসে।
জানা যায়, ২০১৮ সালে এ কোম্পানির মোট প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ১১ কোটি টাকা। এসময় মোট ব্যয় হয়েছে ৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত বছর মোট প্রিমিয়াম আয়ের তুলনায় ৮০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বা ৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বেশি ব্যয় করেছে এ কোম্পানি।
এদিকে, প্রথম প্রান্তিকে ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা মোট প্রিমিয়াম আয় করেছে চার্টার্ড লাইফ। এ সময় মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। সেই অনুযায়ী আলোচ্য সময়ে মোট প্রিমিয়ামের তুলনায় ৬১ দশমিক ৩৩ শতাংশ বা ৬৯ লাখ টাকা বেশি ব্যয় করেছে কোম্পানিটি।
এ কোম্পানির পলিসি ঝড়ে পরার হারও আশঙ্কাজনক। ২০১৮ সালে কোম্পানিটির ২ হাজার ৬৭৭টি পলিসি তামাদি (নির্দিষ্ট সময়ের আগে ঝড়েপড়া) হয়েছে।
অন্যদিকে, নতুন পলিসি ইস্যু হয়েছে ৩ হাজার ৭৫০টি। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকেও কোম্পানিটির ৮১৫টি পলিসি নির্ধারিত মেয়াদের আগে ঝড়ে পড়েছে। এ সময় নতুন পলিসি ইস্যু হয়েছে ১ হাজার ৬৩টি।
চার্টার্ড লাইফের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্বে) এস.এম. জিয়াউল হক দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিনকে বলেন, এখন কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এসেছে। আগের ব্যবস্থাপনায় নানা ধরনের দূর্বলতা ছিল। তবে নতুন ব্যবস্থাপনায় কোম্পানিটি ব্যবসায়িক দিক থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠবে। যার প্রমাণ এ হিসাব বছরের শেষেই পাওয়া যাবে।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বলছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই টানা সাড়ে ছয় বছর ধরে চার্টার্ড লাইফে কোনো প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নেই। চলতি দায়িত্বে যাদেরকে পদটিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তাদের আইনকানুন বিষয়ে পুঁথিগত জ্ঞান না থাকায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে কোম্পানিটি। ফলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবস্থাপনা ব্যয় পড়ছে। যা পর্যাপ্ত জীবন বীমা তহবিল গঠনে বাধা সৃষ্টি করছে। এছাড়া অদক্ষ ও গুণাগুণহীন লোকবল নিয়োগ দেয়ায় কোম্পানির সেবার মান উন্নয়নও হচ্ছে না। ব্যবস্থাপনা শৃঙ্খলা না থাকায় বিভিন্ন অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের অনেকেই নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হবার চেষ্টা করছে। এতে কোম্পানির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন ধারাবাহিকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, টানা দুই বছর অ্যাকচুরিয়াল ভ্যালুয়েশন না করায় চার্টার্ড লাইফে সম্প্রতি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। তবে এ জরিমানা মওকুফের জন্য নানান দিক থেকে তদবির শুরু করেছে কোম্পানিটি। কর্তৃপক্ষের কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে চার্টার্ড লাইফ ভবিষ্যতে নিয়মানুযায়ী চলার জন্য অঙ্গিকারবদ্ধ হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর অনুরোধ জানিয়েছে তারা। তবে অঙ্গিকার পালনে ব্যর্থ হলে কর্তৃপক্ষের যেকোনো ধরনের আইনগত ব্যবস্থা কোম্পানি মেনে নেবে বলে চিঠিতে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান


