নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতার আশা করলেও মঙ্গলবার বিনিয়োগকারীরা দেখলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। দিনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখে যেমন আশার আলো জ্বলেছিল, দুপুরের পর তা ম্লান হয়ে যায়। দুপুর ১২টার পর থেকে সূচকের পতন শুরু হয় এবং দিনের শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। হঠাৎ এই অনাকাঙ্ক্ষিত ধস বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
🔹 দিনের শুরুতে উত্থান, শেষে পতন
মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শুরু হয় সূচকের ইতিবাচক গতিতে। শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০ পয়েন্টের বেশি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু দুপুর ১২টার পর থেকেই সূচক একটানা নিম্নমুখী হতে থাকে, যা শেষ পর্যন্ত আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
দিনশেষে সূচকের পাশাপাশি লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমে যায়। যদিও লেনদেনের পরিমাণ টাকার অঙ্কে বেড়েছে, তবে বাজারজুড়ে ছিল হতাশার আবহ।
🔹 সূচকের সারসংক্ষেপ
সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার সূচকগুলোর পতন ছিল স্পষ্ট।
-
ডিএসইএক্স সূচক: ৪৬.৬৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫,৩৭৭ পয়েন্টে।
-
ডিএসইএস সূচক: ১০.৩৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১,১৬১.৫৪ পয়েন্টে।
-
ডিএসই-৩০ সূচক: ২৩.৮৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২,০৬৪.৯৫ পয়েন্টে।
🔹 কোম্পানি অনুযায়ী লেনদেনের চিত্র
ডিএসইতে আজ মোট ৪০১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে—
-
দর বেড়েছে: ৮৫টির
-
দর কমেছে: ২৮২টির
-
দর অপরিবর্তিত: ৩৪টির
🔹 লেনদেনের পরিমাণ
আজ ডিএসইতে মোট ৭৮৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের ৭৩৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার তুলনায় ৫০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বেশি। অর্থাৎ টাকার অঙ্কে লেনদেন বেড়েছে, কিন্তু বাজারের গতি ছিল নিম্নমুখী।
🔹 চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও পতন
একইদিন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও লেনদেন—দুটিই কমেছে।
সিএসইতে মোট ১২ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের ১২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা থেকে কম।
আজ সিএসইতে মোট ২১৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে—
-
দর বেড়েছে: ৬০টির
-
দর কমেছে: ১৩৮টির
-
অপরিবর্তিত: ১৯টির।
🔹 সিএসই সূচকের অবস্থান
সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই আজ ১১৮.৩৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫,১৭৯.১৪ পয়েন্টে। আগেরদিন সূচকটি ৯৯.১৫ পয়েন্ট বেড়েছিল, যা বিনিয়োগকারীদের আশার বার্তা দিয়েছিল, কিন্তু আজ পরিস্থিতি উল্টো।
🔹 সার্বিক বিশ্লেষণ
দিনের শুরুতে ইতিবাচক ইঙ্গিত থাকলেও শেষ ঘণ্টাগুলোতে বিক্রির চাপ ও বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা বাজারের গতিপথ পরিবর্তন করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে এখন বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট ও তারল্যের ঘাটতি একসঙ্গে কাজ করছে, যা সূচকের পুনরুদ্ধারে বাধা সৃষ্টি করছে।