দুই ফান্ডের খসড়া প্রসপেক্টাস অনুমোদন

দু’ মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপনা হাই কোর্টের আদেশ স্থগিতই থাকল

সময়: শনিবার, মার্চ ১৪, ২০২০ ৮:৫৬:২৯ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : ২ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতের দেয়া স্থিতাবস্থা প্রত্যাহার করেছে আপিল বিভাগ। এগুলো হলো- গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড ও ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ এই আদেশ দেয়। এর ফলে এই দু’ মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এলআর গ্লোবালকে রাখতে হাই কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশটি আর থাকছে না।
তবে এই সংক্রান্ত রুলটি হাই কোর্টে বিচারাধীন থেকে যাচ্ছে। যে রুলে এসইসিসহ অন্য বিবাদীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কোন কর্তৃত্বে এসইসি এই দু’ই মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপনা থেকে এলআর গ্লোবালকে সরানোর সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছিল?
এলআর গ্লোবালের আইনজীবী ব্যারিস্টার আরিফুল ইসলাম বলেন, এই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এলআর গ্লোবালই ওই দু’ মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপক থাকছে বলে তারা আশা করছেন।
গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে দু’টি লিভ টু আপিলের শুনানি হয়। এর একটি দায়ের করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), অন্যটি ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডসহ ছয় ইউনিট হোল্ডার।
গত ২৩ ডিসেম্বর গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড ও ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপনা থেকে এলআর গ্লোবালকে অপসারণের অনুমোদন দেয় বিএসইসি। এই অনুমোদন চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্ট রিট আবেদন করে এলআর গ্লোবাল।
ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর হাই কোর্ট বিবাদীদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়ার পাশপাশি এসইসি’র ওই সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে দেয়।
আপিল বিভাগে বিএসইসি’র পক্ষে ব্যক্তিগতভাবে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ছয় ইউনিট হোল্ডারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।
এলআর গ্লোবালের আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার আরিফুল ইসলাম এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “এলআর গ্লোবাল একটা কোম্পানির ১০০ টাকার শেয়ার ১২ হাজার ৫০০ টাকায় কিনেছে। এখানে (মিউচুয়াল ফান্ডে) লাভের জন্য বিনিয়োগ করেছি। এখন এভাবে বিনিয়োগ করলে আমরা কোথাও যেতে পারব না।”
এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, “স্টে (হাই কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে) থাকুক।”
তখনও আইনজীবীর ডায়াসে ছিলেন মাহবুবে আলম, শুনানির সুযোগ পাননি এলআর গ্লোবালের আইনজীবীরা।
এ সময় বসা থেকে দাঁড়িয়ে এলআর গ্লোবালের আইনজীবীরা স্থিতাবস্থাও বজায় রাখতে বলেন। তবে শেষ পর্যন্ত আপিল বিভাগ তাদের যুক্তি শোনেননি।
পরে এক প্রশ্নের জবাবে এলআর গ্লোবালের আইনজীবী আরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপকদের মধ্যে ‘বেস্ট পারফর্মিং সম্পদ ব্যবস্থাপক’ এলআর গ্লোবাল ২০০৯ সাল থেকে গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড ও ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপনা করে আসছে।
রিট আবেদনের শুনানিতে এলআর গ্লোবালের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরা হয়।
যার মধ্যে রয়েছে, ইউনিট হোল্ডারদের কোনো রকম সভা করা ছাড়াই গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড ও ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপনা থেকে এলআর গ্লোবালকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে বিএসইসি’র সম্মতি সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিধি-২০০১ এর ৩১(২) বিধি লঙ্ঘিত হয়েছে।
এই অপসারণের আগে কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়নি বা শুনানির সুযোগ দেয়া হয়নি উল্লেখ করে বলা হয়, এটা না করায় ন্যায়বিচারের চিরায়ত নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে।
এই যুক্তিও দেখানো হয়, সম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে এলআর গ্লোবালকে অপসারণে বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি (বিজিআইসি) কোনো সুনির্দিষ্ট আদেশ দেয়নি। তাই আইডিএলসি’কে সম্পদ ব্যবস্থাপক করার সিদ্ধান্তে দেয়া অনুমোদন কর্তৃত্ববহির্ভুত বলে পরিগণিত হতে পারে।
আদালতকে আরও বলা হয়, ‘ট্রাস্ট ডিড’ অনুসারে তখনই আবেদনকারীকে অপসারণ করা যেতে পারে, যখন তার বিরুদ্ধে বিশ্বাস ভঙ্গ ও বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনার শর্ত লঙ্ঘনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাবে। যেহেতু এ রকম কোন অভিযোগ নেই, তাই তাকে অপসারণের অনুমোদন কর্তৃত্ব বহির্ভুত বলে ঘোষণা হতে পারে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৮১ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged