editorial

আস্থা সঙ্কটের কারণে তারল্য সঙ্কট

প্রয়োজন সময়োপযোগী পদক্ষেপ

সময়: বুধবার, নভেম্বর ২৭, ২০১৯ ৬:১৬:০৪ অপরাহ্ণ


নানা কারণে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের অবস্থা বর্তমানে খুবই নাজুক। ফলে এ খাতের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন গ্রাহকরা। আর গ্রাহকদের আস্থার সঙ্কটে নতুন আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে তারল্য সঙ্কটে ভুগছে এ খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান। যা প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলেছে। এটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য খুবই নেতিবাচক। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য প্রয়োজন গ্রাহকদের আস্থা সংকট দূর করা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর তারল্য সংকটসহ অন্যান্য সমস্যাগুলো সমাধানে সময়োপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
বর্তমানে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৩টি সহ মোট ৩৪টি লিজিং কোম্পানি পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত লিজিং কোম্পানির সংখ্যা ২৩টি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এসব কোম্পানির অবস্থা দিন দিন খুবই দুর্বল হয়ে পড়ছে। বিনিয়োগকারীরাও এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়েছেন। এদিকে পুঁজিবাজারে একটি কোম্পানির অবস্থা এতোটাই নাজুক হয়ে পড়েছে যে, কোম্পানিটি বর্তমানে অবসায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ কোম্পানিটিতে বিনিয়োগকারীদের বিপুল পরিমাণ টাকা আটকে গেছে। কবে নাগাদ তা ফেরত পাওয়া যাবে বা আদৌ পাওয়া যাবে কিনা সেটিও নিশ্চিত নয়। আরও দুটি কোম্পানিও ধীরে ধীরে একই পথে এগুচ্ছে। এখনই যদি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তাহলে বিপুল অঙ্কের টাকার আটকে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোই নয়, পুরো আর্থিক খাতই আজ হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে অভিযোগ ওঠেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠনগুলো গ্রাহকদের মেয়াদি আমানতের টাকা যথাসময়ে ফেরত না-দেয়া বা ফেরত দেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। ফলে গ্রাহকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এসব প্রতিষ্ঠান থেকে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোই উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমানত সংগ্রহের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ছে। আবার কিছু কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়মবর্হিভূত বিভিন্ন কাজ করে নিজেরাই প্রতিষ্ঠানের সংকট তৈরি করছেন। কোম্পানির মালিকরা তাদের প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের রক্ষিত আমানতসমূহ ঋণ হিসেবে নিয়ে অন্য কোনো খাতে বিনিয়োগ করছেন। কিন্তু যথাসময়ে এসব ঋণ পরিশোধ না করায় উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণের সৃষ্টি হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ থাকলেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায় না।
আর্থিক খাতকে এ সংকট থেকে উত্তোরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে। সময়োপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গ্রাহকদের মেয়াদোত্তীর্ণ আমানত সুদসহ ফেরত প্রদানের মাধ্যমে তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। প্রতিষ্ঠানের মালিকদের বিশ্বাসের ভিত মজবুত ও দায়বদ্ধতার জায়গায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। তাতে বাড়বে গ্রাহকদের আস্থা কমবে তারল্য সংকট।

Share
নিউজটি ৩০৪ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged