বিএসইসি’র নতুন মার্জিন নীতিমালা স্থগিত, এক সপ্তাহ সময় পেল বিনিয়োগকারীরা

সময়: বুধবার, নভেম্বর ১২, ২০২৫ ৫:০৩:২৩ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক ২০২৫ সালের জন্য জারি করা ‘মার্জিন নীতিমালা’ এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও আসিফ হাসানের দ্বৈত বেঞ্চ রুলের মাধ্যমে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

গত সোমবার, এস এম ইকবাল হোসেন ও অন্যান্যরা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (নং-১৮৫৩৯/২০২৫) দায়ের করেছিলেন। পিটিশনের শুনানি বুধবার অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিনিয়োগকারীদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এবং অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন।

শুনানির পর আদালত রিটের প্রেক্ষিতে মার্জিন নীতিমালার ওপর এক সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করেন। একই সঙ্গে রুলের আদেশ অর্থমন্ত্রণালয়, বিএসইসি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন বলেন, “এই রুল বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় সময় দেবে এবং নীতিমালা পুনর্বিবেচনার সুযোগ তৈরি করবে।”

মার্জিন নীতিমালা ২০২৫-এর মূল পয়েন্ট
১. মূল বোর্ডের শেয়ার সীমাবদ্ধতা:

মার্জিন অর্থায়নকারী শুধুমাত্র স্টক এক্সচেঞ্জের ‘A’ ও ‘B’ ক্যাটাগরির শেয়ার ক্রয় করতে পারবে।

শর্ত: ‘B’ ক্যাটাগরির কোম্পানি বছরে ন্যূনতম ৫% লভ্যাংশ বিতরণ না করলে সেই শেয়ার মার্জিন অর্থায়নের জন্য যোগ্য হবে না।

পরবর্তীতে যদি শেয়ার ‘Z’ ক্যাটাগরিতে চলে যায় বা লভ্যাংশ শর্ত পূরণ না হয়, তবে গ্রাহককে ৬০ ট্রেডিং দিনের মধ্যে বিক্রি করতে হবে।

২. SME, ATB বা OTC প্ল্যাটফর্ম:

এই প্ল্যাটফর্মের কোনো শেয়ার মার্জিন অর্থায়নের জন্য অনুমোদিত নয়।

৩. বিদ্যমান মার্জিন হিসাবের নিয়মাবলি:

যদি বিদ্যমান মার্জিন হিসাবের কোনো সিকিউরিটি non-marginable হয়ে যায়, গ্রাহককে ৬ মাসের মধ্যে বিক্রি করতে হবে।

৪. নূন্যতম বিনিয়োগ ও পোর্টফোলিও শর্ত:

গ্রাহকের হিসাবের গড় বিনিয়োগ কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা থাকতে হবে।

বিদ্যমান বিনিয়োগ ৫ লাখ টাকার কম হলে, এক বছরের মধ্যে পোর্টফোলিও উন্নীত করতে হবে, নয়তো মার্জিন বন্ধ হবে।

৫. মার্জিনযোগ্য শেয়ার নির্বাচন শর্তাবলি:

শেয়ারটির উন্মুক্ত বাজার মূলধন (free float market capital) কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা থাকতে হবে।

যদি পরে উন্মুক্ত বাজার মূলধন ৫০ কোটি টাকার নিচে যায়, গ্রাহককে ৬০ ট্রেডিং দিনের মধ্যে বিক্রি করতে হবে।

মূল্য-আয় অনুপাত (P/E ratio) ৩০-এর বেশি হলে শেয়ার মার্জিন অর্থায়নের জন্য অযোগ্য।

৬. অডিট রিপোর্ট ও ব্যবসায় ঝুঁকি:

যদি অডিট রিপোর্টে going concern threat বা অন্যান্য বিরূপ মন্তব্য থাকে, সেই শেয়ার মার্জিন অর্থায়নযোগ্য হবে না।

ব্যবসায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকলে অথবা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘N’, ‘Z’, ‘G’ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত হলে, মার্জিন অনুমোদিত হবে না।

৭. অন্যান্য বিধিনিষেধ:

অ-তালিকাভুক্ত সিকিউরিটি বা পাবলিক অফার/রাইট ইস্যুতে কোনো মার্জিন অর্থায়ন করা যাবে না।

কোনো কোম্পানির পরিচালক তার নিজ কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন ব্যবহার করতে পারবেন না।

গ্রাহকের লককৃত বা ব্লককৃত শেয়ার মার্জিন হিসেবে জমা দেওয়া যাবে না।

বেসরকারি এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য এই স্থগিতাদেশ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সময়সীমা এবং ঝুঁকি পুনর্বিবেচনার সুযোগ দেবে।

 

Share
নিউজটি ৩৩ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged