বিনিয়োগকারীর অভিযোগ নিষ্পত্তিতে নতুন যুগের সূচনা করল বিএসইসি

সময়: শুক্রবার, অক্টোবর ১০, ২০২৫ ৯:০৬:৫২ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ নিষ্পত্তি ও বিরোধ মীমাংসায় বড় পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। দীর্ঘদিনের জটিলতা ও অভিযোগ নিষ্পত্তিতে ধীরগতির সমস্যা সমাধানে কমিশন অনুমোদন দিয়েছে দুটি নতুন প্রবিধানমালা—

  • 🔹 ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বিরোধ নিষ্পত্তি) প্রবিধানমালা, ২০২৫

    🔹 চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (বিরোধ নিষ্পত্তি) প্রবিধানমালা, ২০২৫

মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত বিএসইসির এক বৈঠকে এই প্রবিধানমালাগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়।

দ্রুত ও স্বচ্ছ সালিশ প্রক্রিয়ায় নতুন দিগন্ত
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, নতুন বিধিমালার মূল লক্ষ্য হলো সালিশ প্রক্রিয়া দ্রুততর করা, ব্রোকার ও তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ কমানো, এবং বিএসইসির তদন্তের চাপ হ্রাস করা।

বিনিয়োগকারীরা জানান, অনেক সময় ব্রোকারেজ হাউজ বা কোম্পানির সঙ্গে লেনদেন সংক্রান্ত ছোটখাটো জটিলতা দেখা দেয়, যা ভয় বা সময়ক্ষেপণের কারণে সমাধান হয় না। নতুন বিধিমালা এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের পথ খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রতিটি এক্সচেঞ্জে সালিশ প্যানেল ও রেজিস্ট্রার নিয়োগ
বিধি অনুযায়ী, প্রতিটি এক্সচেঞ্জে একটি সালিশ প্যানেল (Dispute Resolution Board) গঠন করা হবে। এছাড়া একজন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া হবে, যিনি এক্সচেঞ্জের নিয়ন্ত্রণ বিভাগের ডিজিএম বা তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হবেন।

সালিশ প্যানেলে থাকবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, আইনজীবী ও বাজার বিশেষজ্ঞরা। বিনিয়োগকারীরা নির্ধারিত ফরমে অভিযোগ দাখিল করবেন, এরপর রেজিস্ট্রার উভয় পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন।

যদি সমঝোতা না হয়, বিষয়টি সালিশ প্যানেলের কাছে যাবে। উভয় পক্ষ অনুমোদিত তালিকা থেকে নিজ নিজ সালিশকারী নির্বাচন করবে। সাক্ষ্য, প্রমাণ ও নথি যাচাই শেষে সালিশকারীরা রায় দেবেন, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হবে। প্রয়োজনে যে কোনো পক্ষ বিএসইসি বা আদালতে আপিল করতে পারবে।

অনলাইন অভিযোগ মডিউলও কার্যকর থাকবে
এখন বিনিয়োগকারীরা চাইলে বিএসইসি’র অনলাইন অভিযোগ মডিউল অথবা এক্সচেঞ্জের সালিশ ইউনিটে অভিযোগ জমা দিতে পারবেন। ছোটখাটো বিরোধগুলো এক্সচেঞ্জেই নিষ্পত্তি করা হবে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য সময় ও খরচ উভয়ই বাঁচাবে।

স্টক এক্সচেঞ্জ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধরনের সালিশ কাঠামো তৈরির প্রস্তাব ২০১৯ সাল থেকেই ঝুলে ছিল। সরকারি গেজেটে প্রকাশের পরই প্রবিধানমালাগুলো কার্যকর হবে।

বিএসইসি’র মন্তব্য: অভিযোগ নিষ্পত্তিতে গতি আসবে
বিএসইসি মুখপাত্র মো. আবুল কালাম বলেন,“সালিশ প্যানেল কার্যকর হলে অনেক অভিযোগ প্রাথমিক পর্যায়েই মীমাংসা হয়ে যাবে। এতে কমিশনের তদন্তের চাপ কমবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই ব্যবস্থা আগে থাকলে অসাধু ব্রোকারদের তছরুপের অনেক ঘটনাই আগেভাগে রোধ করা যেত।”

তার মতে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ অনুযায়ী এক্সচেঞ্জগুলো নিজস্ব প্রবিধান তৈরির ক্ষমতা রাখে। ফলে সালিশ প্যানেলের রায় আইনি বৈধতা পাবে এবং শেয়ারবাজারে বিরোধ নিষ্পত্তিতে নতুন যুগের সূচনা হবে।

 

Share
নিউজটি ১৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged