বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে আসছে নতুন মুদ্রানীতি

সময়: রবিবার, জুলাই ২৮, ২০১৯ ৫:০৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি প্রান্তিকে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। তাই নতুন প্রান্তিকে লক্ষ্যমাত্রা স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্য নিয়ে চলতি মাসেই নতুন অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি প্রান্তিকে বেসরকারি খাতে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ। আর সরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিবছর দু’বার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। ছয়মাস অন্তর এই মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে প্রকাশ করা হয়। জুলাই প্রান্তিকের মুদ্রানীতির ঘোষণার দিন এখনো ঠিক করা হয়নি। তবে আগামী সোমবার থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে ঘোষণা করা হতে পারে।
দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতোটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ এবং সরকারি খাতে ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু দ্বিতীয় প্রান্তিকে সরকারি খাতে অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন হওয়ায় বেসরকারি খাতে কমিয়ে সরকারি খাতের ঋণপ্রবৃদ্ধি বাড়ানো হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের মুদ্রানীতি ও অর্থনীতির সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে ঋণপ্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় কিছুটা সংশোধন ছাড়া বড় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। নতুন প্রান্তিকেও তাই অর্থসরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হবে বলেই জানা গেছে। তাই বেসরকারি খাতের চলনাম অর্থপ্রবাহ বেঘাত ঘটানো হবে না। তবে লক্ষ্য যাতে অর্জিত হওয়া সেদিকে বেশি নজর দেয়া হবে।
জানা গেছে, কর্পোরেট খাতের অত্যাধিক ব্যাংকনির্ভর মেয়াদি অর্থায়ন ক্রমশ মূলধন বাজারে বন্ড ইস্যু করে অর্থায়নের দিকে মোড় ঘোরাবার চলমান প্রয়াসের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের মেয়াদি অর্থায়ন আহরণের সরলতর বিধিবিধান প্রণয়ন ও প্রবর্তন এখন সময়োচিত হবে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে বিধিব্যবস্থা প্রচলন করেছে। ফলে এই বিষয়েও নতুন মুদ্রানীতিতে দিকনির্দেশনা থাকতে পারে।
দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় গভর্নর ফজলে কবির বলেন, প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ও অর্থনীতির সামগ্রিক সফলতার কারণে দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে বড় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে প্রথমার্ধের ঋণপ্রবৃদ্ধির গতিধারা বিবেচনায় নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধি আগেকার ৮ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কিছুটা সংশোধন করে যথাক্রমে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এক বছর ধরে মুদ্রানীতিতে রেপো ও রিভার্স রেপো সুদ হার অপরিবর্তীত রয়েছে ৬ ও ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে। আর ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১২ শতাংশ।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, জুন মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ২১ শতাংশ কম।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ২৯১ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged