বেসিক ব্যাংকের বেতন কাঠামো নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভক্ত

সময়: সোমবার, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯ ১০:৩৯:৩১ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : বেসিক ব্যাংকের বেতন কাঠামো নিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অফিসাররা স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন। কিন্তু কর্মচারী বা কম্বাইন্ড বার্গেনিং এজেন্ট (সিবিএ) নেতারা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কাঠামোতেই বেতন চান।
জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত অন্যান্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত ২২ ডিসেম্বর নতুন সার্কুলার জারি করে বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ, যা ওইদিন থেকেই কার্যকর করার নির্দেশনা দেয়া হয়। সেদিন থেকেই অফিসাররা বিক্ষোভ শুরু করেন। আবার একই দিন থেকে সিবিএ নেতারা ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নেয়।
এদিকে গতকাল রোববার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসন্তোষ কমাতে বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য জরুরি বৈঠকে বসেছিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। তবে বোর্ডসভাকে কেন্দ্র করে রুমের বাইরে বিক্ষোভ করছেন ব্যাংকের কর্মীরা। এ সময় কর্মকর্তাদের নতুন বেতন কাঠামোর সার্কুলার স্থগিতের পক্ষে সেøাগান দিতে দেখা গেছে।
গতকাল রোববার বিকাল ৪টায় রাজধানীর সেনা কল্যাণ ভবনে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ বোর্ডসভা শুরু হয়। বোর্ডের এ সভাকে কেন্দ্র করে বিকাল থেকেই প্রধান কার্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন কর্মীরা। এ সময় তারা সভার রুমের বাইরে অবস্থান গ্রহণ করেন।
এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন কাঠামো নির্ধারণের নির্দেশনা জারি করেছিল বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এর ফলে কমে যাবে ব্যাংকটির সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের বেতন। এ কারণে বেসিক ব্যাংকের অফিসারদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপর থেকেই নিয়মিত বিক্ষোভ করছেন বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তাগণ।

আন্দোলনরত একজন কর্মকর্তা দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিনকে বলেন, ‘ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী বেতন কাঠামো দেখে আমরা নিজ যোগ্যতায় চাকরি নিয়েছি। এখন বেতন কমানো অযৌক্তিক। বোর্ডের অদক্ষতা, অযোগ্যতা, অনিয়ম এবং দুর্নীতির কারণে ব্যাংক লোকসানে পড়েছে। পর্ষদের দায়ভার আমরা নেব কেন? এটা আমরা মানব না।’
এদিকে বেসিক ব্যাংকের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল মোল্লা দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিনকে বলেন, ‘স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোতে অফিসাররা অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের তুলনায় তিনগুণ বেতন পান। এর ফলে কর্মচারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। গত ১০ থেকে ১২ বছর যাবত কর্মচারীদের বেতন বাড়ছে না। এতে কর্মচারীরা ঠকছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কাঠামোতে বেতন হলে কর্মচারীরা তাদের ন্যায্য পাওনা পাবেন।’
সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকে গত সাত বছর ক্রমাগত লোকসান হওয়ায় বিদ্যমান অতিরিক্ত বেতন-ভাতা ব্যাংকের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এতে ব্যাংকের বিদ্যমান বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুবিধাদি বাতিল করা হলো।
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্যাংকে কর্মরতদের বেতন কমানোর নির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ওইদিন বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা ৩৫৪ কোটি টাকা লোকসান করেছেন। মাত্র ৭২টা ব্রাঞ্চের জন্য এখানে প্রায় ২১০০ জনবল আছে। এত লোকের এখানে কী কাজ?’
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৬৪৩ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged