শিগ্গিরই শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে- সাইফুল ইসলাম

সময়: বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০ ১১:৪০:২৫ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজারের প্রতি সরকারের সব সময় নজর রয়েছে। এ কারণে বাজারে দরপতনে বিনিয়োগকারীরা যখন দিশেহারা ঠিক তখনই সরকার প্রধান বাজারের জন্য কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রত্যেক ব্যাংককে বাজারে দু’ শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করার দুয়ার উম্মুক্ত করার মাধ্যমে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে। আর সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে স্বল্প সময়ের মধ্যে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। যদিও গত কয়েকদিন সূচক ও লেনদেন কিছুটা নেতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিন্তু এতে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। দেশের স্বনামধন্য ব্রোকারেজ হাউজ প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং বিশিষ্ট পুঁজিবাজার বিশ্লেষক সাইফুল ইসলাম ‘দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’ কে এ কথা বলেন। গতকাল দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টারের সঙ্গে বাজার পরিস্থিতির নানা দিক নিয়ে আলাপ করেছেন তিনি। এর চুম্বকাংশ পাঠকের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো:

বিশিষ্ট পুঁজিবাজার বিশ্লেষক সাইফুল ইসলাম বলেন, একটি দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখে ওই দেশের শেয়ারবাজার। আর এ কারণে বাজারে যখন কোনো সমস্যা হয়, তখন বিনিয়োগকারী তথা দেশের স্বার্থে এগিয়ে আসেন সরকার। এবারও তাই হয়েছে- শেয়ারবাজারে যখন তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে তখন বাজারে সাপোর্ট দেয়ার মতো কেউ এগিয়ে আসতে পারছিল না। ঠিক তখনই সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে যে, দেশের প্রত্যেকটি তফসিলি ব্যাংক দু’শত কোটি টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। এ নির্দেশনার পরই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশের শেয়ারবাজার। যদিও গত দু-চারদিন ধরে বাজার সূচক কিছুটা ধীর গতিতে এগুচ্ছে, তা সাময়িক। কারণ, সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে প্রত্যেক তফসিলি ব্যাংক তাদের বিনিয়োগ বাড়াতে পারবে। এর মাধ্যমে বাজারে যে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছিল তা অচিরেই কেটে যাবে। যদিও তা একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যে বাজার অবশ্যই গতিশীল হবে।

তিনি বলেন, বাজারের দুর্দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে জন্ম লগ্ন থেকেই মার্কেট মেকারের ভূমিকা পালন করে আসছে আইসিবি, যা এখনো অব্যাহত আছে। এবার বিশেষ তহবিলের আওতায় প্রতিষ্ঠানটিকে কোনো ফান্ড বরাদ্দ দেয়া হয়নি। একই সঙ্গে দেশে অনেক ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। বাজারে বিনিয়োগের জন্য তাদেরকেও কোনো ফান্ড বরাদ্দ দেয়া হয়নি। আইসিবি এবং দেশের বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাজারের সাপোর্ট দেয়ার জন্য ফান্ড বরাদ্দ দেয়া হলে বর্তমানে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা পুরোপুরি কেটে যেতো। এতে দীর্ঘ মেয়াদি স্থিতিশীল হতো দেশের শেয়ারবাজার।

দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার পরও কেন টানা দরপতন ? এমন প্রশ্নোত্তরে বিশিষ্ট পুঁজিবাজার বিশ্লেষক সাইফুল ইসলাম বলেন, বাজারে বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর মধ্যে গ্রামীণফোন অন্যতম। গ্রামীণফোনের নিকট বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পাওনা নিয়ে একটি গুজব চলছে বাজারে। আদালতের নির্দেশে গ্রামীণফোন এক হাজার কোটি টাকা বিটিআরসি’কে পরিশোধও করেছে। আদালত আরো এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধে তিন মাসের সময় বেধে দিয়েছে। এরপর থেকে বাজারে গুজব চলছে গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) এবার কমে যাবে, কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে পারবে না। আসলে গ্রামীণফোনের নিকট বিটিআরসি যে অর্থ পাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে তা প্রতিবছরই কিছু কিছু করে প্রভিশন সংরক্ষণ করে আসছে। কাজেই গ্রামীণফোন বিটিআরসি’র পাওনা সব অর্থ দিলেও তাদের লভ্যাংশ দিতে কোনো ধরনের সমস্যা থাকার কথা নয়। আসলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এসব বিশ্লেষণ করে না, তাদের বেশিরভাগই গুজবে কান দেন। আর এসব কারণে গ্রামীণফোনের দরপতন হয়েছে, যা পুরো সূচকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে তা একান্তই সাময়িক। বাজার খুব শিগ্গিরই ঘুরে দাঁড়াবে এবং গতিশীল হবে বলে আশা করছি।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩২১ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged