সূচক কমলেও বেড়েছে লেনদেন

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আসন্ন বাজেটে একগুচ্ছ প্রস্তাব

সময়: বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪ ১:২৩:৪৯ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আসন্ন বাজেটে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে দুই শেয়ারবাজার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। আসন্ন বাজেটে শেয়ারবাজারে ৫০ হাজার টাকা ডিভিডেন্ডর ওপর ট্যাক্স প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জ।

পাশাপাশি শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির করপোরেট কর হারের ব্যবধান বৃদ্ধি, ট্রেকের লেনদেনের বিপরীতে উৎসে কর হ্রাস এবং বন্ড মার্কেট শক্তিশালী করতে সুদ আয়ের ওপর কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে দুই সংস্থা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও আর্থিক খাতের সংগঠনগুলো বাজেটে অন্তর্ভুক্তের জন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব দেয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, শেয়ারবাজারকে গতিশীল করতে বাজারে নতুন কোম্পানি আনা প্রয়োজন। তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির করপোরেট কর হারের ব্যবধান বাড়ানোর মাধ্যমে সেটি করা সম্ভব।

এছাড়া স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে লাভ-ক্ষতি নির্বিশেষে প্রতি লাখ টাকা লেনদেনে ৫০ টাকা উৎসে কর আদায় করা হয়।

এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ পড়ছে, যা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ১৩ টাকা, পাকিস্তানে ২০ টাকা এবং হংকং-এ ২ টাকা ৭০ পয়সা আদায় করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ডিভিডেন্ডকে চূড়ান্ত করদায় হিসাবে বিবেচনা করা উচিত। বর্তমানে ডিভিডেন্ডর ওপর দ্বৈত হারে কর আদায় করা হচ্ছে। একই প্রস্তাব দেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার।

বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি বলেন, বিমা কোম্পানিগুলো ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করে। একজন গ্রাহকের কাছ থেকে প্রিমিয়াম নেওয়ার বিপরীতে ১৫ শতাংশ উৎসে কর কর্তন করা হয়। সেই অর্থ বিদেশে ও দেশে রি-ইন্সুরেন্স করার সময় আবারও ১৫ শতাংশ ভ্যাট দাবি করা হচ্ছে। বর্তমানে ভ্যাট গোয়েন্দা একাধিক বিমা কোম্পানিকে এ বিষয়ে তলব করেছে। একই প্রিমিয়াম আয়ের ওপর একাধিকবার ভ্যাট আদায় অযৌক্তিক।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার বাংলাদেশের সভাপতি সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, গত কয়েক বছর যাবৎ ব্যাংকগুলো চাপে আছে। এ খাতে করসংক্রান্ত নীতি সহায়তা দেওয়া হলে ব্যবসা বাড়বে, এতে রাজস্ব আয়ও বাড়বে, অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে।

তিনি আরও বলেন, ঋণ ও আমানত দেওয়ার ক্ষেত্রে পিএসআর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ দিতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক আমানতকারী ব্যাংকে আমানত না রেখে অন্য ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে রাখছে।

এফ হোসেন আরও বলেন, মন্দ ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী প্রভিশন রাখতে হয়। কিন্তু আয়কর বিভাগ মন্দ ঋণকে আয় হিসেবে গণ্য করে করপোরেট কর আরোপ করছে, এর কোনো যৌক্তিকতা নেই। সিএসআর খরচের ক্ষেত্রে একই অবস্থা। অন্যদিকে জিরো কুপন বন্ডে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করলে কর ছাড় পায়, কিন্তু বেসরকারি ব্যাংক পায় না। যা আয়কর আইনের বিচ্যুতি।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, সব খাত অস্তিত্ব সংকটে আছে, কর ছাড়ের মাধ্যমে সবাই শক্তিশালী হতে চায়। কিন্তু দেশকে শক্তিশালী করতে হলে কর আদায়ের বিকল্প নেই। এনবিআর সাধ্যমতো সব খাতকে সহযোগিতা করতে চায়।

তিনি আরও বলেন, কোথায়, কেন কর ছাড় দিচ্ছি, ফলাফল কী পাচ্ছি, কর ছাড়ের যৌক্তিকতা কতটুকু সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে কর ছাড় কমিয়ে আনা

শেয়ারবাজারকে গতিশীল করতে এনবিআর কী সহায়তা দিচ্ছে এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলো কী সহায়তা দিয়ে থাকে তা পর্যালোচনা করতে বাজারসংশ্লিষ্টদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

 

Share
নিউজটি ৯৯ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged