শেয়ারবাজার উন্নয়নে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তাবনা

সময়: রবিবার, জুন ২, ২০২৪ ৮:২৮:৩৫ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী কিছু প্রস্তাবণা উপস্থাপন করেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।

রোববার (২ জুন) সিএসই’র চট্টগ্রাম কার্যালয়ে প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম এসব প্রস্তাবণা তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিএসইর পরিচালক এমদাদুল ইসলাম, পরিচালক মোহাম্মদ নাকিব উদ্দিন খান, পরিচালক মোহাম্মদ আক্তার পারভেজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সিএসই’র চেয়ারম্যান বলেন, একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বাজার কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে শেয়ারবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আসন্ন বাজেটে শেয়ারবাজারের গুণগত সম্প্রসারণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য যথাযথ কৌশল নির্ধারণ করে দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আসিফ ইব্রাহিম বলেন, আগামী ৬ জুন অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য বাজেট উপস্থাপন করবেন। আমরা আশা করি চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জসমূহ বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় তার সুযোগ্য অর্থমন্ত্রী একটি টেকসই ও গতিশীল বাজেট উপস্থাপন করবেন। একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বাজার কাঠামো তৈরি করার ক্ষেত্রে শেয়ারবাজার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। জাতীয় বাজেট দেশের জন্য শুধুমাত্র একটি বাৎসরিক আয় ব্যয়ের হিসাব নয়, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত দিক নির্দেশনাও বটে। বর্তমান সরকারের কৌশলগত উন্নয়ন পরিকল্পনায় বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিতকরণ এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত রাষ্ট্রে উন্নিতকরণের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তার সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য একটি যথোপযুক্ত অর্থ বাজার কাঠামো তৈরি করা খুবই গুরুত্বপুর্ণ। একটি টেকসই বাজার কাঠামোর জন্য অর্থবাজার, শেয়ারবাজার এবং অন্যন্ন প্রাসঙ্গিক কাঠামোর একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমাদের আর্থিক বাজার কাঠামো কার্যত অনেকাংশে ব্যাংক ব্যবস্থা তথা অর্থ বাজারের উপর নির্ভরশীল। যার বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতে ইতিমধ্যে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই আগামী বছরের জাতীয় বাজেটে শেয়ারবাজারের গুণগত সম্প্রসারণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য যথাযথ কৌশল নির্ধারণ করে দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

শেয়ারবাজার উন্নয়ন কৌশলপত্রে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণে সিএসইর প্রস্তাবণা হলো-

তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ

বর্তমানে ৩৪৯টি কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আছে। স্থিতিশীল শেয়ারবাজারের জন্য গুণগত মান সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই সংখ্যা একটি সন্তোষজনক সংখ্যায় উন্নীতকরন করা প্রয়োজন।

কার্যকর কর্পোরেট বন্ড মার্কেট চালুকরণ

দেশে ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের লক্ষ্যে একটি স্থিতিশীল শক্তিশালী বন্ড মার্কেট অতীব জরুরি। একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট গঠন ও নতুন বন্ডের তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে পণ্যের বৈচিত্রতা আনয়নের নিমিত্তে বন্ড হতে উদ্ভুত আয়কে কর অব্যহতি প্রদান করা প্রয়োজন।

মার্কেট ক্যাপ জিডিপি রেশিও বৃদ্ধিকরণ

বাংলাদেশের অর্থনীতি সমসাময়িক দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মার্কেট ক্যাপ জিডিপি রেশিও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্থানীয় এবং বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার একটি প্যারামিটার হিসেবে বিবেচিত হয়।

শেয়ারবাজারের জন্য বাজার মধ্যস্থতাকারী ও বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ: বর্তমানে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে দক্ষ বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের সংকট রয়েছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যহারে কম। এই সংখ্যা একটি কাঙ্খিত স্তরে উন্নিত করা প্রয়োজন।

শেয়ারবাজারে পণ্য বৈচিত্র্যকরণ

বর্তমান শেয়ারবাজার শুধুমাত্র ইকুইটি মার্কেটনির্ভর। যার ফলে বাজারে যেমন অনাকাঙ্ক্ষিত অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়, তেমনি এটি শেয়ারবাজার সম্প্রসারণের অন্তরায়। এই লক্ষ্যে কার্যকর কৌশলের মাধ্যমে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন।

এসব লক্ষ্য সমূহ স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে বাস্তবায়ন করা গেলে একটি কার্যকর শেয়ারবাজার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে বলে মনে করে সিএসই।

Share
নিউজটি ২২ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged