১৫ বছরেও চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় ন্যাশনাল লাইফ ঘেরাও

সিইও’র আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত

সময়: বৃহস্পতিবার, মার্চ ৫, ২০২০ ৪:৫১:২২ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ানবাজারে অবস্থিত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল লাইফের প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করেন সারাদেশ থেকে আসা প্রায় দুই শতাধিক কর্মী। এ কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ঘেরাওয়ের পর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জামাল এ নাসেরর আশ্বাসে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা আন্দোলন স্থগিত করে ফিরে গেছেন। ইন্সুরেন্সটির কর্মীদের এই ঘেরাও কর্মসূচির মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সিইও চলতি মাসেই চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দেন। এই আশ্বাসে দুপুর ২টার দিকে তারা আন্দোলন স্থগিত করে ন্যাশনাল লাইফের প্রধান কার্যালয় ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়া নজরুল ইসলাম বলেন, সিইও স্যার আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন এ মাসেই চাকির স্থায়ী করবেন। স্যারের এই আশ্বাসে আমরা আন্দোলন বন্ধ করেছি। আশা করি সিইও স্যার আমাদের যে আশ্বাস দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করবেন।
এই কর্মীরা বলছেন, ১০-১৫ বছর ধরে চাকরি করার পরও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তা স্থায়ী করছে না। নানা অজুহাতে চাকরি স্থায়ী করা বন্ধ রেখেছে। এখন চাকরি চলে যাওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে তাদের।
তবে কোম্পানিটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেছেন, কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ী করা হবে। এ বিষয়ে কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। তাদের চাকরি স্থায়ী করা সংক্রান্ত চিঠি ইস্যুর অপেক্ষায় রয়েছে। বিষয়টি আন্দোলনরত কর্মীরা জানেন না। কেউ হয়তো তাদের ভুল বুঝিয়ে আন্দোলনে নামিয়েছে।
চাকরি স্থায়ী করার দাবির আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি মাস্টার্স পাস করে চাকরিতে ঢুকেছি। আমার চাকরির বয়স সাড়ে ৮ বছর হয়ে গেছে। আমাকে এখন বেতন দেয়া হয় ৭ হাজার ৮৪৯ টাকা। একদিকে চাকরি স্থায়ী করা হচ্ছে না, অন্যদিকে নামমাত্র বেতন। এতে আমরা মানবেতর জীবন-যাপন করছি। তাই চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আমরা দুই শতাধিক কর্মকর্তা ন্যাশনাল লাইফ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছি।
তিনি বলেন, এর আগেও আমাদের চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু চাকরি স্থায়ী করা হচ্ছে না। গভ বছরের ৫ ডিসেম্বর আমরা প্রধান কার্যালয়ে এসেছিলাম। সেসময় জানুয়ারির মধ্যে আমাদের চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। চাকরি স্থায়ী করা হয়নি, এখন তারা ভয় দেখাচ্ছে চাকরি যাওয়ার।
আন্দোলনে অংশ নেয়া মিজানুর রহমান সোহাগ নামের আরেকজন বলেন, এইচএসসি পাস করে আমি রেকর্ড কিপার হিসেবে ২০০৯ সালে ন্যাশনাল লাইফে যোগ দিই। সেসময় আমার বেতন ছিল ৩ হাজার টাকা। গত ১১ বছরে বেতন বেড়েছে মাত্র ১ হাজার ৫০০ টাকার মতো। পরিবার নিয়ে আমরা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। কোম্পানি বারবার আশ্বাস দিয়েও আমাদের চাকরি স্থায়ী করছে না। এ কারণে আন্দোলনে নেমেছি।
নজরুল ইসলাম নামের আরেকজন বলেন, ১৫-২০ বছর ধরে ক্যাজুয়াল কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করা হলেও আমাদের চাকরি স্থায়ী করা হচ্ছে না। বেতনও দেয়া হচ্ছে খুবই সামান্য। শ্রমিক নীতিমালার কোনোকিছুই মানা হচ্ছে না। দফায় দফায় চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এ কারণে আমরা আন্দোলন নামতে বাধ্য হয়েছি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জামাল এ নাসের জাগো নিউজকে বলেন, সবার চাকরি স্থায়ী করা হবে। তাদের চাকরি স্থায়ী করা সংক্রান্ত চিঠি ইস্যু হয়েছে। বিষয়টি তারা জানে না। এ কারণে হয়তো আন্দোলন করছে।
ডিসেম্বরে চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিসেম্বরে ব্যবসার হিসাব ক্লোজিংয়ের ব্যস্ততা ছিল। এ ছাড়া বীমা মেলা ও দিবস নিয়েও অনেক ঝামেলা গেছে। সবার চাকরি স্থায়ী করার বিষয়ে আমরা খুবই ইতিবাচক। শিগগির তাদের চাকরি স্থায়ী করা হবে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged