লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ ২৭ কোম্পানি

হতাশ বিনিয়োগকারীরা

সময়: রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০১৯ ৯:২১:১৮ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারে জুন মাসে হিসাব বছর শেষ হওয়া কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের মৌসুম প্রায় শেষ দিকে। দীর্ঘ মন্দা বাজারে লভ্যাংশের মৌসুমেও বাজার ঘুরে না দাঁড়ানোর কারণে বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশিত মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। বিপরীত দিকে আলোচ্য সময়ে লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে ২৭ কোম্পানি। এসব কোম্পানির লভ্যাংশ গেইন থেকে বঞ্চিত বিনিয়োগকারীরা।
ইনটেক লিমিটেড। কোম্পানিটি ২০০২ সালে বাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকে নগদ লভ্যাংশ দেয়ার কোনো নজির নেই। তবে এবার বোনাস লভ্যাংশ দিতে পারেনি কোম্পানিটি। কারণ কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকরা নিয়মানুযায়ী ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ শেয়ার আছে। এর মাধ্যমে বোনাস লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা হারিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিপরীত দিকে গত সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটি নগদ লভ্যাংশ না দিয়ে বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রেনউইক যজ্ঞেশ্বর। কোম্পানিটি লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করলেও গত সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করেছে। এতে হাতাশ হয়েছে বিনিয়োগকারীরা।
শুধু ইনটেক লিমিটেড, রেনউইক যজ্ঞেশ্বরই নয় এমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান মুনাফা করলেও গত সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দিয়ে বঞ্চিত করেছে। এসব কোম্পানির লভ্যাংশ না দিয়ে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর হওয়ার মন্দা বাজারে শেয়ার দরেও নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে গেইন করতে পারছে না।
যেসব কোম্পানি লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড, ইনটেক লিমিটেড, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস, উসমানিয়া গ্লাস, জিলবাংলা সুগার, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, বেক্সিমকো সিনথেটিক্সস, শাইনপুকুর সিরামিক, আরএ স্পিনিং মিলস, আরামিট সিমেন্ট, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজ, গোল্ডেন সন লিমিটেড, জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ইমাম বাটন ইন্ডাস্ট্রিজ, ফাস্ট ফাইন্যান্স লিমিটেড, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড, জুট স্পিনার্স, সাভার রিফ্রেক্টরিজ, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ লিমিটেড, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১২ শতাংশই হচ্ছে বস্ত্রখাতের প্রতিষ্ঠান। বস্ত্রখাতে ৫৫টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত আছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে বস্ত্রখাতের ভালো কোম্পানি থাকলেও পুঁজিবাজারে অধিকাংশই দুর্বল মৌলভিত্তির প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত। এসব কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরন করতে পারছে না।
তারা বলছেন, এবার বেশ কিছু কোম্পানি জুন মাসে হিসাব বছর শেষে মুনাফা অর্জন করা সত্ত্বেও লভ্যাংশ দেয়নি। এছাড়া কিছু কোম্পানি রয়েছে যা দুর্বল মৌলভিত্তির, সেসব প্রতিষ্ঠানও লভ্যাংশ দিতে পারেনি। দুই ধরনের কোম্পানিই বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করেছে। কেউ ইচ্ছে করে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। কেউ প্রকৃত অর্থে ব্যবসা খারাপের কারণে লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তবে যেসব কোম্পানি লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা থাকলে তা দেয়নি, বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সুরক্ষা পাবে। ফলে ভবিষ্যতে কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা থাকলেও কোম্পানিগুলো তা না দেয়ার মতো হঠকারী সিদ্ধান্ত নেবে না। তাছাড়া ভবিষ্যতে আরও অনেক কোম্পানি এ সুযোগ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর পাঁয়তারা করবে বলে মনে করছেন তারা।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ২৯৪ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged