হুমকিতে ন্যাশনাল টিউবস ও উসমানীয়া গ্লাস

সময়: বুধবার, নভেম্বর ২৭, ২০১৯ ৯:৪৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানি উসমানীয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি এবং ন্যাশনাল টিউবস এর লোকসান বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানি ২টির নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আপত্তি জানিয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠান ২টির ভবিষ্যৎ হুমকিতে রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
উসমানীয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি : উসমানীয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরির ১ এবং ২ নাম্বার চুলার সক্ষমতা ছিল ২ কোটি ১ লাখ স্কয়ার ফিট (২ এমএম বেসিস)। এর মধ্যে ১ নাম্বার সক্ষমতা ৬৭ লাখ স্কয়ার ফিট। আর ২ নাম্বার চুলার সক্ষমতা ১ কোটি ৩৪ লাখ স্কয়ার ফিট। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ নাম্বার চুলা বন্ধ রয়েছে। প্রস্তুতকৃত অবিক্রীত মালামাল অতিমাত্রায় জমা রয়েছে। কারণ দর কমে যাওয়ায় এ পণ্য আর বিক্রি হচ্ছে না। নিরীক্ষক বলছে, এ চুলাটি আবার চালু করতে গেলে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে। এমনিতেই কোম্পানিটি পণ্য উৎপাদনে চরম প্রযুক্তিগত সমস্যার মধ্যে রয়েছে। তাতে প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোর আধুনিক প্রযুক্তি সেটিকে আরও তীব্র করে তুলেছে। এতে পণ্য বিক্রির চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে। এতে বিগত বছরে কোম্পানিটির পরিচালনগত লোকসান অনেক বেশি হয়েছে।
নিরীক্ষক বলছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ৩২ লাখ স্কয়ারফিটের সাব স্ট্যান্ডার্ড গ্লাস শিটের পণ্য ২০১৮-১৯ সালে বিক্রি হয়েছে। ৭ টাকা ৯৪ পয়সা স্কয়ারফিটে মোট বিক্রি হয় ২ কোটি ৫৪ লাখ ৮ হাজার টাকা। যার মূল্যায়িত দর ছিল ১৪ টাকা ১৪ পয়সা। সে হিসাবে আসে ৪ কোটি ৭১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে এ পণ্যে নেট লোকসান বেড়েছে ২ কোটি ১৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এর সাথে ২০১৫ সালে মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নে নেট লোকসান দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৬১ লাখ ৩৪ হাজার ৫২৪ টাকায়। এটাও কোম্পানিটির পরিচলনগত লোকসানের অন্যতম কারণ। এছাড়া কোম্পানির সেলস কমিশন এবং কাঁচামাল (সোডা অ্যাশ এবং ডোলোমাইট পাথর) গত বছরের তুলনায় দর বেড়েছে। এতে পরিচলনগত লোকসানের পরিমাণও বেড়েছে। সবমিলে কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়িয়েছে ৩৫ কোটি ৬৪ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা। যা কোম্পানিটির ব্যবসায়িক ভবিষ্যতকে আরও শঙ্কিত করে তুলেছে। যদি কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটিকে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা এবং মেশিনারিজ স্থাপনে সহযোগিতা না করে তবে ভবিষ্যৎ হুমকিতে। ১৯৮৭ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৫১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সরকারের কাছে। উদ্যোক্তা পরিচালকের কাছে রয়েছে ২ শতাংশ শেয়ার। ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রতিষ্ঠানের কাছে। বাকি ৩৭ দশমিক ০৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।

ন্যাশনাল টিউবস: ন্যাশনাল টিউবস বিগত কয়েক বছরে লোকসান করে চলেছে। এতে কোম্পানিটির রিটেইন আরনিংস এর ব্যালেন্সড কমে যাচ্ছে। তাছাড়া চলমান লোকসানের কারণে কয়েক বছর ধরে কোম্পানির অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো নেতিবাচক রয়েছে। এ অবস্থা কোম্পানির ভবিষ্যতকে চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এতে নিরীক্ষক মনে করছে কোম্পানি ব্যবসায়িক ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। পুরো অনুমানের ভিত্তিতে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হচ্ছে। কোম্পানিটি শেষ তিন বছর লোকসান করে চলেছে। এতে কোম্পানির রিটেইন আরনিং ব্যালেন্স প্রায়ই শেষ হয়ে গেছে। এখনই পরিচালনা পর্ষদের সঠিক পদক্ষেপ না থাকলে কোম্পানিটির প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। কোম্পানিটির অগ্রিম ট্যাক্স দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি ৩১ লাখ ১১ হাজার ২৩৩ টাকা। তবে কোম্পানিটির আয়কর হয়েছে ৫ কোটি ৯১ লাখ ৩৫ হাজার ৮২২ টাকা। কোম্পানিটি এ অতিরিক্ত আয়কর সমন্বয় করতে পারেনি। এছাড়া নতুন মজুরি বোর্ড বাস্তবায়ন এবং আনুষাঙ্গিক ব্যয় সামঞ্জ্যহীন হয়ে পড়েছে কোম্পানিটি।
১৯৮৯ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৫১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সরকারের কাছে। ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রতিষ্ঠানের কাছে। বাকি ৩৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।
দৈকিন শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪২৪ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged