১০ কার্যদিবস সময় পেলো ডিএসই : কপারটেককে তালিকাভুক্তির নির্দেশ বিএসইসি’র

সময়: বৃহস্পতিবার, জুলাই ২৫, ২০১৯ ৬:২২:৪৭ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : আর্থিক হিসাবে অঙ্গতির অভিযোগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর লেনদেনের তালিকা থেকে ‘কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ’-কে অব্যাহতির সুপারিশের জবাবে প্রতিষ্ঠানটিকে তালিকাভুক্তির নির্দেশ দিয়েছে ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন’ (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অবহিত করার জন্য ডিএসই-কে ১০ কার্যদিবস সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার কমিশনের এ নির্দেশনা সংক্রান্ত এ চিঠি ডিএসই কার্যালয়ে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্ত করার জন্য ডিএসই লিস্টিং রুলস্্, ৫ এর ৩ ধারা থেকে অব্যাহতি (ওয়েভার) চেয়ে বিএসইসি’-তে চিঠি পাঠায় ডিএসই কর্তৃপক্ষ। ডিএসই লিস্টিং রুলস্্, ৫ এর ৩ ধারা অনুযায়ী কোনো কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করলে ওই কোম্পানির আইপিও সাবস্ক্রিপশন (আইপিও আবেদন গ্রহণ) শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তালিকাভুক্ত হতে হয়। তবে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ক্ষেত্রে ওই সময় অনেক আগেই পার হয়ে গেছে। ফলে ওই ধারাটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে ডিএসই।
এদিকে ডিএসই’র চিঠির একদিনের ব্যবধানে কমিশন তাদের জবাব জানিয়ে চিঠি দেয়। এক্ষেত্রে তারা ডিএসই’র প্রস্তাবিত লিস্টিং রুলস্্, ৫ এর ৩ ধারা থেকে অব্যাহতি না দিয়ে ৫ এর ৪ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। যে ধারায় বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্তি নিয়ে যে কোনো রিক্যায়ারমেন্ট বা প্রভিশনিং শিথিল করতে পারবে। বিএসইসি লিস্টিং রুলস্্, ৫৫ ধারার ক্ষমতা বলে এই নির্দেশনা দিয়েছে।

এর আগে গত ২২ জুলাই আইনগতভাবে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্ত করার সুযোগ না থাকায় লিস্টিং রুলস্্, ৫ এর ৩ ধারা থেকে অব্যাহতির জন্য বিএসইসির কাছে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসই কর্তৃপক্ষ। কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারবাজার থেকে ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করার অনুমোদন পায়। উত্তোলিত ২০ কোটি টাকার মধ্যে ৬০ শতাংশ অর্থ ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্যয় করা হবে। আর কোম্পানিটি প্লান্ট মেশিনারিজে ব্যয় করবে সাড়ে ৬ কোটি টাকা। তাছাড়া ভবন নির্মাণ, সিভিল ওয়ার্কসহ আনুষঙ্গিক কাজে ব্যয় করবে সাড়ে ৫ কোটি টাকা। কোম্পানিটি সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করবে সাড়ে ৬ কোটি টাকা আর আইপিও বাবদ খরচ করবে দেড় কোটি টাকা। কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৭০ কোটি টাকা। আইপিও শেয়ার বাদে পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা। আর আইপিও শেয়ার ধরে পরিশোধিত মূলধন ৬০ কোটি টাকা। প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য হবে ১০ টাকা।
এ টাকা উত্তোলনে ৩১ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিও’তে আবেদন গ্রহণ করা হয়। ফলে চলতি বছরের ২৬ মে’র মধ্যে কোম্পানিটি ডিএসই’তে তালিকাভুক্তির বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু ডিএসই পর্ষদ অনুমোদন না দেয়ায় কোম্পানিটির তালিকাভুক্তি আটকে যায়। এরপর ডিএসই’র পর্ষদ কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির জন্য ২৩ জুন পর্যন্ত সময় দিয়ে বিএসইসি’র কাছে দিকনির্দেশনা চেয়ে চিঠি দেয়। তবে বিএসইসি ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো দিকনির্দেশনা বা পরামর্শ দেয়া থেকে বিরত থাকে।
গত ১১ জুলাই কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ম্যানেজমেন্টের কাঁধে দায়িত্ব দেয় ডিএসই পরিচালনা পর্ষদ। এর আলোকে ম্যানেজমেন্ট কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের তালিকাভুক্তির বিষয়ে আইন-কানুন পর্যালোচনা করে। যা ডিএসই’র সভায় দাখিল করা হয়। যা যাছাই-বাছাই শেষে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্তির জন্য লিস্টিং রেগুলেশনের ৫ এর ৩ ধারা থেকে অব্যাহতির জন্য বিএসইসি’র কাছে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এর আগে ২৩ মে আর্থিক হিসাবে অসঙ্গতির অভিযোগে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদ। আর ৪ জুলাই কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ইস্যুতে অসহযোগিতার জন্য বিতর্কিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ অ্যান্ড আক্তারের প্র্যাকটিসিং লাইসেন্স নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয় দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি সব ধরনের কোম্পানির নিরীক্ষা কাজের যোগ্যতা হারিয়েছে।
কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ২০১৮ সালের ৩১ মে কোম্পানিটি পাবলিক লিমিটেডে রূপান্তর হয়। আর ২০১৪ সালের জুন মাসে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। কোম্পানিটি মূলত কপার বার, কপার রড, কপার স্ট্রিপ, কপার ওয়ার, কপার পাইপ এবং কপার টিউব উৎপাদন করে। যা দেশীয় মার্কেটে বিক্রয় হয়।

উল্লেখ্য, আইপিওতে কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে এমটিবি ক্যাপিটাল লিমিটেড।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩১৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged