৯ শূন্য ডিএমডি পদের জন্য দৌঁড়ঝাপ, জ্যেষ্ঠদের বাদ পড়ার আশঙ্কা

সময়: বৃহস্পতিবার, জুলাই ১৮, ২০১৯ ৪:৪৬:১৬ পূর্বাহ্ণ


হাসান আরিফ : রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে পদোন্নতি নিয়ে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রথমবারের মতো নিয়োগের জন্য সাক্ষাৎকার নেয়ায় এ জটিলতা তৈরি হয়েছে। ডিএমডি হওয়ার জন্য অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় দৌঁড়ঝাপ ও লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের বাদ পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিকে ডিএমডি পদে পদোন্নতির সাক্ষাৎকার গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক সেটি চূড়ান্ত করে এখনো তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠায়নি বলে জানা গেছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, চলতি মাসে দুই দফায় সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডিএমডি পদে পদোন্নতির জন্য তালিকাভুক্ত মহা-ব্যবস্থাপকদের (জিএম) মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। এদিকে দীর্ঘদিনের চলমান নীতিমালা অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এ পদে পদোন্নতি দেয়ার কথা। অন্যদিকে নতুন নীতিমালায় সাক্ষাৎকার নেয়ার বিধান থাকলেও তা এখনো খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। ফলে এটি এখন বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে অনেকে মনে করছেন। তাদের মতে, পদোন্নতি দিতে হলে পুরনো নীতিমালায় দিতে হবে, নয়তো নতুন নীতিমালা অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত পদোন্নতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
এদিকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে না হয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতির সিদ্ধান্তে যোগ্য মহাব্যবস্থাপকদের মধ্যে বাদ পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে পদোন্নতি দেয়ার সিদ্ধান্তের পর অনেকেই লবিং শুরু করে দিয়েছেন। এতে জ্যেষ্ঠদের মধ্যে কিছুটা হতাশা তৈরি হয়েছে, যেকোনো সাধারণ কারণ দেখিয়ে তাদের বাদ দেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
জানা যায়, সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিএমডি পদে মোট ৯টি শূন্য পদ রয়েছে। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকে ২টি, সোনালী ব্যাংকে ১টি, জনতা ব্যাংকে ১টি, বাংলাদেশ ব্যাংকে ১টি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে ১টি, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে ১টি, কর্মসংস্থান ব্যাংকে ১টি ও বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিতে ১টি (ডিএমডি) পদ শূন্য রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ২৭ জন মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম)। তাদের মধ্যে অনেকেই জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক ‘শেয়ারবাজার প্রতিদিন’-কে বলেন, ‘যোগ্যরাই পদোন্নতি পাবেন। অযোগ্যদের কোন সুযোগ নেই।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার দাম আছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগে কোন কোন ক্ষেত্রে অযোগ্যরাও সুযোগ পেয়েছে। এটা প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো নয়।’
তার মতে, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতেই নিয়োগ দেওয়া উচিত। কারণ সিনিয়ররা অনেক কিছু জানেন ও বোঝেন।
এদিকে এবার শুধু সাক্ষাৎকারই নেয়া হয়নি। প্রার্থীদের মোবাইল ফাইন্যান্সিং সার্ভিসেস, ডিজিটাল ব্যাংকিং, প্রকল্প ঋণ ব্যবস্থাপনা, খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনা ও করপোরেট গভর্ন্যান্স Ñএই পাঁচটি বিষয়ের যে কোনো একটির ওপর ১০ নম্বরের একটি প্রেজেন্টেশনও দিতে হয়েছে।
এছাড়া বাকি ৯০ নম্বর দেয়া হবে প্রার্থীদের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন, শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরির অভিজ্ঞতা, ব্যাংকিং ডিপ্লোমা, নেতৃত্বের গুণাবলী, পেশাগত ডিগ্রি, চাকরি জীবনে বহুমুখী অভিজ্ঞতা, পেশাগত দক্ষতা, দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণ, পেশাগত প্রকাশনা, অর্জিত প্রণোদনা এবং পুরস্কার, ইনোভেশন ও কমিউনিকেশন দক্ষতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩১০ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged