সরকারি কোম্পানিগুলোতে বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ

সময়: মঙ্গলবার, জানুয়ারি ২১, ২০২০ ১২:০৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানিতে ডিসেম্বর মাসে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। সরকারি কোম্পানির উপর আস্থা থাকার কারণে মন্দা বাজারেও এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে বিনিয়োগ বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তালিকাভুক্তির বাইরে থাকা সরকারি কোম্পানিগুলো শেয়ার মার্কেটে আনতে পারলে পারলে তা বাজার স্থিতিশীলতায় সহায়ক হবে বলে মনে করছেন তারা।

দীর্ঘ মন্দা বাজারের বাতাস লেগেছে বাজারে তালিকাভুক্ত সরকারি, বেসরকারি, বহুজাতিক সব ধরনের কোম্পানির শেয়ারে। এমন পরিস্থিতিতেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সরকারি কোম্পানির শেয়ার ধারণের পরিমাণ বাড়িয়েছে। এসব কোম্পানির উপর তাদের আস্থা থাকার কারণে মন্দা বাজারে তারা কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে পদ্মা অয়েলে। ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির ২৯ দশমিক ১৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। আগের মাসে তাদের কাছে কোম্পানির ২৯ দশমিক ১১ শতাংশ শেয়ার ছিল। গত প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর,১৯) শেষে পদ্মা অয়েলের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৪৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ৭ টাকা। কোম্পানিটি ২০১৮ সালের সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আলোচ্য লভ্যাংশের হার (ইল্ড) ছিল ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
এদিকে, লোকসানে থাকায় শ্যামপুর সুগার দীর্ঘ দিন ধরে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারছে না। এ কারণে কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। ডিসেম্বর শেষে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির ১ দশমিক শূণ্য ৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছে। আগের মাসে তাদের বিনিয়োগ ছিল কোম্পানির শূণ্য দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ারে।
শুধু পদ্মা অয়েল বা শ্যামপুর সুগার কোম্পানিই নয়, গত ডিসেম্বর মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ বাড়িয়েছে যমুনা অয়েলে। ডিসেম্বর শেষে কোম্পানির মোট শেয়ারের ২৬ দশমিক ৭১ শতাংশ ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। আগের মাসে তাদের কাছে ছিল ২০ দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ার। এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে দুর্বল মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার কারণে বাজারে মন্দা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এসব কোম্পানির অনুমোদন না দিয়ে সরকারি কোম্পানিগুলো বাজারে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। সরকারি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেশি। সুতরাং সরকারি কোম্পানির শেয়ার অফলোডের মাধ্যমে শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় সহায়ক হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু আহমেদ ‘দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’- প্রতিনিধিকে বলেন, বাজারে আরও সরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার এলে ভালো হতো। সরকার বার বার উদ্যোগ নিলেও নানা জটিলতার কারণে কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে আসছে না। তাই জটিলতা কাটানোর মাধ্যমে এসব শেয়ার বাজারে আনা উচিৎ।

এদিকে, ডিসেম্বরে ইস্টার্ন ক্যাবল, ন্যাশনাল টিউবসেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে। আলোচ্য দুই কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ রয়েছে যথাক্রমে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং ১৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ারে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ অপরিবর্তিত রয়েছে ন্যাশনাল টি এবং রেইনউইক যজ্ঞেশ্বর কোম্পানিতে। এছাড়া ৫ টি কোম্পানির হালনাগাদ তথ্য গতকাল পর্যন্ত প্রকাশ করেনি।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪৩৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged