নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বন্ড ইস্যু করে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে ‘আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড’। ইতোমধ্যে কোম্পানিটির আইপিও আবেদনের তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে চলবে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত। কোম্পানিটি ১০০ কোটি টাকার সাথে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে আরো ৫০০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে।
উত্তোলিত ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ভূমি উন্নয়ন এবং সিভিল কাজের জন্য ব্যয় করা হবে ৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। প্রাইমারি জ্বালানির জন্য ৩০ কোটি টাকা, যানবাহন কেনা বাবদ খরচ করা হবে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসালটেন্সি সেবা বাবদ খরচ করা হবে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা, ওয়ার্কিং ক্যাপিটালে ১০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা এবং আইপিও বাবদ খরচ করা হবে ৪ কোটি ২১ লাখ টাকা।
আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন প্রতিটি ৫ হাজার টাকার ইস্যু মূল্যের ২ লাখ নন-কনভার্টেবল, পুরোপুরি অবসায়নযোগ্য, কূপন বিয়ারিং বন্ড আইপিও’র মাধ্যমে ইস্যু করবে। এর মধ্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও সিআইএসের ১০ শতাংশসহ মোট ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ বন্ড প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ বন্ড এনআরবিসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
একজন সাধারণ বিনিয়োগকারী এই বন্ড মার্কেটে ইক্যুইটি শেয়ারের মতো লেনদেন করতে পারবেন। তবে যারা এ বন্ড কিনে বিনিয়োগ করবেন, তারা নির্ধারিত হারে সুদ হিসেবে মুনাফা পাবেন। এই হার নির্ধারণ করা হবে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদের হারের সাথে ৪% মার্জিনযুক্ত হার (যা সর্বনিম্ন সাড়ে ৮ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ শতাংশ)।
সাত বছর মেয়াদি বন্ডটির কুপন অর্ধ-বার্ষিক থেকে প্রদেয় হবে। ডিএসই থেকে ইস্যুয়ারের ব্যাংক হিসাবে তহবিল স্থানান্তরের দিন থেকে ১২ মাস পর প্রথম কুপন প্রদান করা হবে। বন্ডটি ৪ কিস্তিতে সম্পূর্ণভাবে অবসায়ন হবে। এর মধ্যে প্রথম ৩ বছর পর চতুর্থ বছরে ২৫ শতাংশ, পঞ্চম বছরে ২৫ শতাংশ, ষষ্ঠ বছরে ২৫ শতাংশ এবং সপ্তম বছরে ২৫ শতাংশ অবসায়ন হবে।
ইস্যুয়ার সূত্রে জানা যায়, বিনিয়োগকারীরা এই বন্ডে বিনিয়োগ করলে ফিক্সড ইনকামের মতো সুদ পাবেন। পাশাপাশি বিনিয়োগ করা অর্থ হারানোরও ভয় থাকছে না তার। ঝুঁকিপূর্ণ ইক্যুইটি মার্কেটের এ ধরণের বন্ডে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশিত নিশ্চিত মুনাফার সাথে বিনিয়োগও সংরক্ষিত রাখতে পারবেন।
আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি ২০০০ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এরপরই কোম্পানিটি পাবলিক লিমিটেডে রূপান্তর হয়। প্রথমে ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধন নিয়ে শুরু করলেও পরে তা ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়। কোম্পানিটির মূল ব্যবসা ইলেক্ট্রিক লাইট, পাওয়ার জেনারেশন, বিপিডিপির মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিক্রি করা।
কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০১৭ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ২৬৫ টাকা ৯৬ পয়সা। আর শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ২২ টাকা ৭৮ পয়সা। বিগত ৫ বছরের ওয়েটেড এভারেজ শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১০ টাকা ৬৩ পয়সা। ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের কোম্পানিটির কর পরবর্তী মুনাফা ১৫০ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ৬৬১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৬ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড কাজ করছে। এছাড়া ট্রাস্টি হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান