আর্থিক রিপোর্টের অস্বচ্ছতায় শেয়ারবাজারের অনাস্থা সৃষ্টি হচ্ছে

সময়: বৃহস্পতিবার, মার্চ ৫, ২০২০ ১১:৩৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : কোম্পানির আর্থিক রিপোর্টের অস্বচ্ছতার কারণে শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থার উত্তরণে কোম্পানির মালিকদেরই আগে উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়া শিগগিরই একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবকাঠামো তৈরিতে শেয়ারবাজার অব্যাহতভাবে অবদান রাখবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে উন্নত এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এক সেমিনারে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন বিএমবিএ সেমিনারের আয়োজন করে। ‘শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আর্থিক প্রতিবেদনের গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএমবিএ’র সভাপতি ছায়েদুর রহমান।

প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সিকিউকে মোস্তাক আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএ’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর মাহফুজুর রহমান।

ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এবং কমিশনের পক্ষ থেকে যেসব সংস্কার করা হয়েছে, সেগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি শিগগিরই শেয়ারবাজারে সুদিন আসবে। সেই প্রত্যাশাই করছি। তবে আমাদের এ প্রত্যাশা এবং প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে, যদি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার জায়গা নিশ্চিত না হয়।

তিনি বলেন, আজকের বাজারের অন্যতম ক্রাইসিস হলো আস্থার অভাব। আস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত ইক্যুইটি সাপ্লাই, ব্যাংকিং সেক্টরের অবস্থা, ইন্টারেস্ট রেট- যেগুলোতে অনেকে ভুল বুঝেন। আপনারা জেনে রাখবেন, মানি মার্কেটে যদি ইন্টারেস্ট রেট কমে, তাহলে ক্যাপিটাল মার্কেটে তারল্য সরবরাহ বাড়বে। এজন্য কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এ নিয়ে ব্যাংকের মুনাফা কমে যাবে বলে বাজারে গুজব আছে, যা ঠিক না।

বিএসইসি’র চেয়ারম্যান আরও বলেন, আর্থিক প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতার অনুপস্থিতি শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। একটি কোম্পানিতে তিন ধরনের রিপোর্ট তৈরি হয়। একটি রিপোর্ট কোম্পানিতে এলেই কী হচ্ছে সেটা থাকে। দ্বিতীয় রিপোর্ট হল ইনকাম ট্যাক্সের জন্য। সেখানে কোম্পানির প্রকৃত আয় কমিয়ে দেখানো হয়। তৃতীয় রিপোর্ট হলো বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য আয় বাড়িয়ে তৈরি করা হয়। এই অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কোম্পানির মালিকদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। এটা অনৈতিক ব্যবস্থাপনা থেকে সরে আসতে সহায়ক হবে। এছাড়া এসব দুর্নীতি বন্ধে সিএফও এবং অডিটরদের নিজেদের জায়গা থেকে শক্ত অবস্থানের জন্য অনুরোধ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। কোম্পানির মালিক কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে, নিজ পেশাদারির নৈতিকতার প্রতি সম্মান দেখানো এবং গুরুত্ববোধের জায়গা তৈরি করলে এসব দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব।

এফআরসি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ বলেন, শুধু পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নয়, আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে রাষ্ট্রের রাজস্ব আয়েরও সম্পর্ক রয়েছে। তাই সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যই নির্ভরযোগ্য আর্থিক প্রতিবেদন অনেক জরুরি।

ছায়েদুর রহমান বলেন, একটি কোম্পানির একেক জায়গায় একেক রকম আর্থিক হিসাব জমা দেয়। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আর্থিক হিসাব সংরক্ষণের জন্য একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরির করতে হবে।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩১৩ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged