উভয় স্টক একচেঞ্জে কপারটেকের লেনদেন শুরু আগামী সোমবার

সময়: বুধবার, জুলাই ৩১, ২০১৯ ৬:০১:৩৭ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া ‘কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’-এর শেয়ার লেনদেন আগামী সোমবার (৫ আগস্ট) থেকে শুরু হবে। ডিএসই’র ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে একই দিনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হবে। সিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফারুক ‘দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’ -কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডিএসই ট্রেডিং কোড : ‘ঈঙচচঊজঞঊঈঐ’ এবং কোম্পানি কোড : ১৩২৪৭।
এর আগে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৬৭০তম সভায় কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। পরে ৩১ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিও-তে আবেদন গ্রহণ করা হয়। গত ৯ জুন কোম্পানিটির বরাদ্দ পাওয়া শেয়ার শেয়ারহোল্ডারদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবে জমা করা হয়।
কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারবাজার থেকে ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করে। এ জন্য প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নেয়া হয়েছে ১০ টাকা। কোম্পানিটি প্লান্ট ও যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্থাপন, ভবন ও সিভিল ওয়ার্ক খাত, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয়ের জন্য শেয়ারবাজার থেকে এ পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করে।
৩০ জুন ২০১৮ সমাপ্ত হিসাব বছরের সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী পুনঃমূল্যায়ন ছাড়া নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস রিভ্যালুয়েশন ছাড়া) দাঁড়িয়েছে ১২.০৬ টাকা (কোম্পানিটি কোনো সম্পদ পুনঃমূল্যায়ন করেনি) এবং শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২.৬০ টাকা ও ডায়লুটেড শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.০৩ টাকা। ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.৮৭ টাকা।
আইপিওতে কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করছে ‘এমটিবি ক্যাপিটাল লিমিটেড’।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ মে আর্থিক হিসাবে অসঙ্গতির অভিযোগে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদ। এরপর ৪ জুলাই কোম্পানিটির ইস্যুতে অসহযোগিতার জন্য বিতর্কিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ অ্যান্ড আক্তারের প্র্যাকটিসিং লাইসেন্স নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয় দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাদের প্যানেল অডিটরের তালিকা থেকে আহমেদ অ্যান্ড আক্তারকে বাদ দেয়। পরবর্তীতে ১১ জুলাই কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ম্যানেজমেন্টের কাঁধে দায়িত্ব দেয় ডিএসই পরিচালনা পর্ষদ। এর আলোকে ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির বিষয়ে আইন-কানুন পর্যালোচনা করে। যাছাই-বাছাই শেষে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্তির জন্য লিস্টিং রেগুলেশনের ৫ এর ৩ ধারা থেকে অব্যাহতির জন্য বিএসইসি’র কাছে চিঠি পাঠায় ডিএসই। ১৭ জুলাই কোম্পানিটিকে ডিএসইতে তালিকাভুক্তির নির্দেশ দেয় বিএসইসি। এ লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অবহিত করার জন্য ডিএসইকে ১০ কার্যদিবস সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ২৩ জুলাই কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্ত করার জন্য ডিএসই লিস্টিং রুলস্্, ৫ এর ৩ ধারা থেকে অব্যাহতি (ওয়েভার) চেয়ে বিএসইসিতে চিঠি পাঠায় ডিএসই কর্তৃপক্ষ। ডিএসই লিস্টিং রুলস্্, ৫ এর ৩ ধারা অনুযায়ী কোনো কোম্পানি আইপিও’র মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করলে ওই কোম্পানির আইপিও সাবস্ক্রিপশন (আইপিও আবেদন গ্রহণ) শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তালিকাভুক্ত হতে হয়। তবে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ক্ষেত্রে ওই সময় অনেক আগেই পার হয়ে গিয়েছিল। ফলে ওই ধারাটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে ডিএসই।
এদিকে ডিএসই’র চিঠির একদিনের ব্যবধানে কমিশন তাদের জবাব জানিয়ে চিঠি দেয়। এক্ষেত্রে তারা ডিএসই’র প্রস্তাবিত লিস্টিং রুলস্্, ৫ এর ৩ ধারা থেকে অব্যাহতি না দিয়ে ৫ এর ৪ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্তি নিয়ে যে কোনো রিক্যায়ারমেন্ট বা প্রভিশনিং শিথিল করতে পারবে। বিএসইসি লিস্টিং রুলস্্, ৫৫ ধারার ক্ষমতা বলে এই নির্দেশনা দেয়।
কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ২০১৮ সালের ৩১ মে কোম্পানিটি পাবলিক লিমিটেডে রূপান্তর হয়। আর ২০১৪ সালের জুন মাসে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। কোম্পানিটি মূলত কপার বার, কপার রড, কপার স্ট্রিপ, কপার ওয়ার, কপার পাইপ এবং কপার টিউব উৎপাদন করে, যা দেশীয় মার্কেটে বিক্রয় হয়।

দৈনিক শেয়ারবাজার /এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৩৩ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged