নিজস্ব প্রতিবেদক : শিল্প খাতে বেড়েই চলেছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। বড় উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ গত একবছরে বেড়েছে ৭৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এ খাতে বিতরণ করা ঋণের বড় অংশই এখন খেলাপি। ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে এ খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ঠেকেছে ৫৭ হাজার ২০১ কোটি টাকায়। যা এ খাতে বিতরণ হওয়া ঋণের ১৪.৩০ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৩৮ হাজার ৪৯৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ফলে এক বছরের ব্যবধানে এ খাতেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১৮ হাজার ৭০২ কোটি টাকা বা ৪৮.৫৮ শতাংশ।
অন্যান্য খাতের চেয়েও শিল্প খাতে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির হার বেশি। এই হার সার্বিক খাতের গড় খেলাপি ঋণের হারেও চেয়েও বেশি। গত জুন পর্যন্ত সার্বিক ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার ১১.৬৯ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিল্প খাতে যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ বেড়েছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বেড়েছে সর্বোচ্চ ৪৯.৪০ শতাংশ। এর পরেই বেসরকারি ব্যাংকের বেড়েছে ৪১.৭৫ শতাংশ। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের ১.৩৬ শতাংশ, বিদেশি ব্যাংকের ১ শতাংশ ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ৬.৪৯ শতাংশ খেলাপি ঋণ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ খাতে খেলাপি ঋণ স্থিতির দিক থেকেও এগিয়ে বড় শিল্প উদ্যোক্তারা। ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে বড় শিল্পে এ হার দাঁড়িয়েছে ৬৬.২৪ শতাংশ। এ ছাড়া মাঝারি শিল্পে ২২.৩৮ শতাংশ ও ক্ষুদ্রশিল্পে ১১.৩৮ শতাংশ।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিল্প খাতে মোট ঋণ বিতরণ করা হয়েছে তিন লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে ১৫.৪৩ শতাংশ বেশি। এ সময়ে শিল্পঋণ আদায় হয়েছে তিন লাখ ১৯ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে ১৭.০৫ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছর শেষে শিল্প খাতে বকেয়া ঋণ স্থিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুন শেষে যা ছিল চার লাখ ৩২ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। ফলে গেল এক বছরে শিল্প খাতে বকেয়া ঋণ স্থিতি বেড়েছে ২২.৯৫ শতাংশ।
অন্যদিকে গত অর্থবছরে এ খাতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষে ছিল ৬০ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত এক বছরে শিল্প খাতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ বেড়েছে ২২.৯৫ শতাংশ।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান