কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজতে রোডম্যাপ দাখিলের নির্দেশ

সময়: মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৬, ২০২১ ১২:০৭:০৯ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক: গত সাত বছর ধরে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসইর) কর্তৃপক্ষ কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজছে। এ সময়ে স্টক এক্সচেঞ্জটিকে ছয় দফায় কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে নেওয়ার সময় দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এমন পরিস্থিতিতে দেশের দ্বিতীয় স্টক এক্সচচেঞ্জটিকে ব্যাপক এবং সময়-ভিত্তিক রোডম্যাপ দাখিল করার নতুন নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

একইসঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রাথমিক পারস্পরিক বোঝাপড়া নিশ্চিত করতে না পারাকে সিএসইসি’র ব্যর্থতা বলে মনে করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

সম্প্রতি সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সর্বেশেষ চলতি বছরের ৮ মার্চ পর্যন্ত ছয় দফায় কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে নেওয়ার শেষ সময় ছিল সিএসই’র। এরপর আরও এক দফা অর্থাৎ সপ্তম দফায় বিএসইসি’র কাছে কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে নেওয়ার সময় চায় স্টক এক্সচেঞ্জটি।

তারই ধারাবাহিকবতায় আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সপ্তম দফায় সিএসইকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে নেওয়ার জন্য সময় বর্ধিত করেছে বিএসইসি।

সিএসইকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছৈ, কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি করার জন্য সিএসইকে ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত সাতটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। আর ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৮ মার্চ পর্যন্ত ষষ্ঠ দফায় কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছে সিএসই। সপ্তম দফার নির্দেশনা অনুযায়ী, চলতি বছরের ২ মে থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিএসইকে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি করার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের ত্রৈমাসিক পর্যালোচনায় বিএসইসি লক্ষ্য করেছে যে, সিএসই’র এখনও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। এমনকি এ সময়ের মধ্যে সিএসই কোনো কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে সুনির্দিষ্ট প্রাথমিক পারস্পরিক বোঝাপড়া তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়।

এ পরিস্থিতি বিবেচনায় সিএসইকে ব্যাপক এবং সময়-ভিত্তিক রোডম্যাপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। ওই চিঠি জারির ১৫ দিনের মধ্যে সম্ভাব্য কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন বিষয়ক রোডম্যাপ দাখিল করতে বলা হলো।

ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন (ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথককরণ) আইন অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কৌশলগত বিনিয়োগকারী খোঁজা শুরু করে। ২০১৮ সালের শেষ দিকে ডিএসই কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজে পায়। তবে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছে সিএসই। কিন্তু উভয় পক্ষের হিসাব মিলছে না বলে এ বিনিয়োগকারী পাচ্ছে না সিএসই।

এখন পর্যন্ত সিএসই দুবাই স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে আলোচনা করেও আশানুরূপ ফল পায়নি।

এছাড়া, তুলনামূলক কম দরে ডিএসইর শেয়ার বিক্রি করায় সিএসই দর কষাকষিতেও উন্নতি করতে পারছে না। ইতোমধ্যে ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই) সঙ্গে যোগাযোগ করছে সিএসই।

করোনার আগেই এনইসি, হংকং, কয়েতের আবুধাবীর সঙ্গে কথা হয়েছিল। বিশেষ করে হংকংয়ের সঙ্গে অনেকটা কথা এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরেও এ বিষয়ে সিএসই’র তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ইংল্যান্ড, সুইডেন ও নরওয়ে স্টক এক্সচেঞ্জকেও কৌশলগত বিনিয়োগকারী হওয়ার জন্য সিএসই আহ্বান জানিয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে সিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক এমদাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সিএসই’র কৌশলগত বিনিয়োগকারী খোঁজার বিষয়ে হংকং, কুয়েত, সাংহাইসহ বেশ কয়েকটি গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আলোচনা যতক্ষণ ফলপ্রসূ না হচ্ছে, ততক্ষণ কৌশলগত বিনিয়োগকারী চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। কৌশলগত বিনিয়োগকারী খোঁজার বিষয়ে আমাদের হাতে এখনও সময় রয়েছে। বিএসইসি আমাদের কাছে এ কাজের হালনাগাদ তথ্য জানতে চেয়েছে।

 

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ২৪৬ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged