গ্রামীণফোনকে ৩ মাসের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধের নির্দেশ

সময়: সোমবার, নভেম্বর ২৫, ২০১৯ ১০:৪৬:২৮ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্রামীণফোনের কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পাওনা ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা আগামী ৩ মাসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
গতকাল রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম ও খন্দকার রেজা-ই রাকিব এবং গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর আপিল বিভাগ গ্রামীণফোনকে কোন ফোরামে মধ্যস্থতা না করার নির্দেশ দিয়ে ২৪ অক্টোবর আদেশের দিন ধার্য করেন।
গত ২১ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান বিটিআরসির আবেদনের ওপর নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করে দেন।
২৪ অক্টোবর পাওনা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে গ্রামীণফোন ন্যূনতম কত টাকা বিটিআরসিকে দিতে পারবে তা জানতে চান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত ৩১ অক্টোবর আদালত বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে গ্রামীণফোন এখন কত টাকা দিতে পারবে, তা জানতে চেয়েছিলেন। একইসঙ্গে গ্রামীণফোনের আইনজীবীদের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মূলতবি করেছিলেন।
গত ১৭ অক্টোবর বিচারপতি একেএম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীব সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনা আদায়ের ওপর দুই মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন। গ্রামীণফোনের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞাসহ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে আগামী ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত ।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল পাওনা দাবি করে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়েছিল। পরে গ্রামীণফোন ওই চিঠির বিষয়ে নিম্ন আদালতে মামলা করে। একইসঙ্গে ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত গ্রামীণফোনের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।
বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা নিয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বিটিআরসি কয়েক ধাপে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও টাকা আদায় করা সম্ভব হয়নি। আর উভয়পক্ষের এই দ্বন্ধে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা কয়েক হাজার কোটি টাকা হারিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিটিআরসি গত ২ এপ্রিল গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা দাবি করে চিঠি দেয়। এরমধ্যে বিটিআরসির পাওনা ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি ১ লাখ টাকা ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাওনা ৪ হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। বিটিআরসির পাওনার মধ্যে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সুদের পরিমাণ রয়েছে ৬ হাজার ১৯৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এসব পাওনা প্রদানে গ্রামীণফোনকে প্রথমবারের চিঠিতে ১০ কার্যদিবস সময় বেধে দেয় বিটিআরসি।
গত ১ এপ্রিল কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর ছিল ৪১৭ টাকা। আর ২ এপ্রিল থেকে বিটিআরসির সঙ্গে পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার প্রায় সাড়ে ৭ মাসের মাথায় বা ২৩ নভেম্বর শেয়ারটির দর দাঁড়িয়েছে ৩২৯ টাকা ৫০ পয়সা। এক্ষেত্রে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। আর প্রতিষ্ঠানটির মোট ১৩৫ কোটি ৩ লাখ শেয়ারের দাম কমেছে ১১ হাজার ৮১৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৪৬২ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged