editorial

চা উৎপাদনে রেকর্ড: উৎপাদন আরো বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে

সময়: সোমবার, জানুয়ারি ২০, ২০২০ ১২:০৫:৫১ পূর্বাহ্ণ


দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন’র গত কালের সংখ্যায় দেশের চা উৎপাদন নিয়ে একটি আশাব্যাঞ্জক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ টি বোর্ড (বিটিবি) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিগত ১৬৫ বছরের মধ্যে আর কখনোই এত বিপুল পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়নি। ২০১৯ সালে দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল ৮০ মিলিয়ন বা ৮ কোটি কেজি। এর বিপরীতে নভেম্বর মাস পর্যন্ত মোট চা উৎপাদিত হয়েছে ৮৯ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ৯০ লাখ কেজির মতো। ডিসেম্বর মাসের উৎপাদন যোগ করা হলে এই পরিমাণ সাড়ে ৯ কোটি কেজিতে উন্নীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে মোট ৮২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ২১ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল। ২০২৫ সাল নাগাদ দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে ১৪ কোটি কেজি। সাম্প্রতিক সময়ে চা উৎপাদনে যেভাবে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে তাতে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের মোট চা উৎপাদনের পরিমাণ ১৪ কোটি কেজিতে উন্নীত করা খুব একটা কঠিন হবে বলে মনে হয় না।
বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক গৃহীত পানীয় হচ্ছে চা। চা অতিথি আপ্যায়নের উপকরণ হিসেবে যেমন ব্যবহৃত হয় একই সঙ্গে এটি একটি চমৎকার অর্থকরি কৃষি পণ্যও বটে। এক সময় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য তালিকা তৈরি করতে গেলে পাট এর পরেই চা’য়ের নাম উচ্চারিত হতো। কালের বিবর্তনে পাট তার গৌরবময় ঐতিহ্য অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে। চামড়া খাতের অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। কিন্তু চা এখনো তার ঐতিহ্য ধরে রেখে এগিয়ে চলেছে। পাহাড়ি উঁচু জমি যেখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় কিন্তু বৃষ্টির পানি জমে থাকে না এমন জমিতেই চা উৎপাদিত হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এটা প্রমানিত হয়েছে যে সমতল ভূমিতেও চা জন্মাতে পারে। বিশেষ করে পঞ্চগড় এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে প্রচুর পরিমাণ অর্গানিক চা উৎপাদিত হচ্ছে। অন্য অনেক ফসলের চেয়ে চা উৎপাদন বেশি লাভজনক বলে পঞ্চগড় এলাকার সাধারণ মানুষ চা উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছে। চেষ্টা করলে দেশের অন্যান্য সমতল ভূমিতেও চা উৎপাদন করা যেতে পারে। আগামীতে চা হয়ে উঠতে পারে কৃষকের সৌভাগ্যের প্রতীক। তাই পরিকল্পিতভাবে চা উৎপাদনের প্রতি জোর দিতে হবে। সরকার নানাভাবে চা উৎপাদকদের প্রণোদনা দিয়ে চলেছেন। আশা করা যায়, আগামীতে চা আমাদের দেশের জন্য আরো বেশি পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।

Share
নিউজটি ৪৫৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged