জ্ঞানের অভাব ও লোভের কারণে বিনিয়োগকারীরা লোকসান করে : আরিফ খান

সময়: মঙ্গলবার, মার্চ ১, ২০২২ ১২:০৩:৪৪ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক কমিশনার আরিফ খান বলেন, না বুঝে ও লোভের কারনে বিনিয়োগের মাধ্যমে ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী লোকসান করে এবং করতে বাধ্য। হয়তো এভাবে বিনিয়োগ করে ১ বছর মুনাফা করা যায়। কিন্তু সেই মুনাফা বাসায় নিয়ে যাওয়া যায় না। কারন লোভের বশবর্তী হয়ে আবারও ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ করে। যা একসময় লোকসানে নিয়ে যায়। এই বাজারে লোভ ও ভয় নিয়ে মুনাফা করা সম্ভব না।
গতকাল দিলকুশাস্থ হোটেল পূর্বাণীতে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এবং বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটি মার্কেটের (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে ‘পুঁজিবাজারে মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির প্রভাব’ শীর্ষক কর্মশালায় প্যানেল আলোচক বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ এবং প্যানেল আলোচক হিসেবে অধ্যাপক আবু আহমেদ, অধ্যাপক মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন, বিআইবিএমের শাহ মোহা আহসান হাবীব ও সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন বিএএসএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী।

যারা বুঝে না, তাদেরকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য ফান্ড ম্যানেজারদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন আরিফ খান। তিনি বলেন, এই খাতের অ্যাসেট ম্যানেজারদের নিয়ে সমালোচনা থাকলেও সবাই খারাপ না। টুকটাক সব খাতেই খারাপ লোকজন আছে। তাই ভালো ফান্ড ম্যানেজারদের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন তিনি। এক্ষেত্রে ফান্ড ম্যানেজারদের বিগত কয়েক বছরের ইতিহাস দেখে বাছাই করা যেতে পারে।

আরিফ খান বলেন, কোন কোন রেগুলেটর মনে করে শেয়ারবাজার তাদের অংশ না। এই ধারনা ঠিক না। এটা পাল্টাতে হবে। কারন মানিটরি পলিসির সঙ্গে শেয়ারবাজার সরাসরি জড়িত।

অনেকে ভুল করে মূল্যসূচক কমে গেলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দোষারোপ করে বলে জানান তিনি। অথচ সূচক নিয়ন্ত্রণ করা রেগুলেটরের কাজ না। এই সূচক উঠানামা করাটাও স্বাভাবিক। টানা উঠা স্বাভাবিক না।

তিনি বলেন, এই বাজারে ১৫টা কোম্পানি গত ৭ বছরে গড়ে প্রতি বছর ২০% এর বেশি রিটার্ন দিয়েছে। কিন্তু সেখানে কেউ বিনিয়োগ করতে চায় না। কারন ওইসব শেয়ার নিয়মিত বাড়ে না। সবাই দ্রুত ক্যাপিটাল গেইন চায়।

ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে না আসার পেছনে কারন হিসেবে বিএসইসির এই সাবেক কমিশনার বলেন, একটি অতালিকাভুক্ত কোম্পানি চাইলেই ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দিতে পারে। তার কাছে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির ১০% কর হার ব্যবধান অনর্থক। কারন সে তো পুরোটাই ফাঁকি দেয়। তবে একটি ভালো কোম্পানি যদি শেয়ারবাজারে আসতে চায়, তাহলে তাকে সঠিক ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হবে। ফলে প্রতিযোগি অতালিকাভুক্ত কোম্পানি তালিকাভুক্ত কোম্পানির তুলনায় কম দরে পণ্য বিক্রি করতে পারবে। যাতে করে তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রতিযোগিতা থেকে হারিয়ে যাবে।

এদিকে আর্থিক হিসাবে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে বলে জানান তিনি। যাতে করে বিনিয়োগকারীদেরকে প্রতারণার স্বীকার হতে হয়। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে তুলতে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া ৩টি কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট ও সিএফওকে সঠিক শাস্তি দিতে পারলে, অন্যরা সবাই ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ২৫৫ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged