ডরিন পাওয়ারের ২ কর্মকর্তার জরিমানার পরিমাণ কমলো

সময়: বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১০, ২০১৯ ১২:০০:০৪ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ‘ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস’-এর কর্মকর্তাদের আর্থিক জরিমানার পরিমাণ কমিয়েছে ‘বিএসইসি’। একই সঙ্গে জরিমানার অর্থ কিস্তিতে পরিশোধেরও অনুমতি দেয়া হয়েছে। কোম্পানির কর্মকর্তাদের এক রিভিউ পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, ২ জন কর্মকর্তার জরিমানা কমানো হয়েছে। এর মধ্যে ‘ডরিন পাওয়ার’-এর সহযোগী কোম্পানি ‘ঢাকা নর্দার্ন পাওয়ার জেনারেশন’-এর ডিজিএম ওয়াহিদুজ্জামান খানের জরিমানা ১০ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ৬ লাখ টাকা এবং ‘ডরিন পাওয়ার’-এর পরিচালক মোস্তফা ময়িন-এর স্ত্রী চৌধুরী ফারাহ নাজ সামিয়া’র জরিমানা ১০ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ৬ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকি কর্মকর্তার রিভিউ পিটিশন নাকচ করা হয়েছে।
এর আগে বিএসইসি‘র ৬৫৫তম কমিশন সভায় সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে কোম্পানিটির ৭ কর্মকর্তাকে জরিমানা করা হয়। কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশের আগে এবং নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যে কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করার কারণে (সুবিধাভোগী ব্যবসা নিষিদ্ধকরণ বিধিমালা) ১৯৯৫ এর বিধি ৪ (১) (২) ভঙ্গ করেন তারা।
কারণ আইনে বলা হয়েছে (১) ‘কোন ব্যক্তি নিজে বা অন্য কারো মাধ্যমে সুবিধাভোগী ব্যবসা করবে না বা এরূপ ব্যবসার ব্যাপারে কোন ব্যক্তিগত পরামর্শ প্রদান বা সহায়তা করবে না। (২) স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কোনো উদ্যোক্তা, পরিচালক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী, নিরীক্ষক বা নিরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, পরামর্শক বা আইন উপদেষ্টা কিংবা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ১২তে উল্লিখিত সুবিধাভোগী উক্ত কোম্পানির বার্ষিক হিসাব সমাপ্ত হওয়ার ২ মাস আগে থেকে কোম্পানির পর্ষদ কর্তৃক বার্ষিক হিসাব চূড়ান্ত অনুমোদনের তারিখ পর্যন্ত কোনো শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় কিংবা অন্য কোনোভাবে স্থানান্তর বা গ্রহণ করতে পারবে না।’
এতে বিএসইসি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ২২ মোতাবেক ডিজিএম ওয়াহিদুজ্জামান খান-কে ১০ লাখ টাকা, চৌধুরী ফারাহ নাজ সামিয়া-কে ১০ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করে। এছাড়া ‘ডরিন পাওয়ার’-এর সিএফও আফরোজ আলম, স্বতন্ত্র পরিচালক মাহতাব বিন আহমেদ, সহকারী মহাব্যবস্থাপক ইকবাল হোসেন, সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক ফজলে এলাহী খান-কে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এক্ষেত্রে রিভিউ পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানির ডিজিএম ওয়াহিদুজ্জামান খান এবং চৌধুরী ফারাহ নাজ সামিয়া’র জরিমানার হ্রাসকৃত অর্থ সমান ১২টি কিস্তিতে এবং অন্যদের ৩টি কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। মোট রিজার্ভ রয়েছে ২৭৩ কোটি ৬৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। স্বল্প মেয়াদে ঋণ রয়েছে ২৮৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আর দীর্ঘমেয়াদে ঋণ রয়েছে ৫৪৩ কোটি ৭৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির বর্তমান পিই রেশিও ৯ দশমিক ৬২ পয়েন্ট, সর্বশেষ অ-নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির বর্তমান পিই রেশিও ৯ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট।
গত ৩০ জুন ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩০ শতাংশ (১৭ শতাংশ নগদ এবং ১৩ শতাংশ বোনাস) লভ্যাংশ সুপারিশ করে। এ সময় শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয় ৭ টাকা ৯১ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৪৪ টাকা ১৯ পয়সায়।
কোম্পানির মোট শেয়ারের ৬৬ দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকের কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ২০ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার, বিদেশিদের কাছে রয়েছে দশমিক ০৭ শতাংশ এবং ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।
দৈনিক শেয়ারবাজার প্রতিদিন/এসএ/খান

Share
নিউজটি ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged