ডিএসই’র কারিগরি ক্রটি তদন্ত করবে বিএসইসি

সময়: রবিবার, আগস্ট ২৭, ২০২৩ ১:৩৬:৫২ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) কারিগরি ত্রুটি তদন্ত করবে বিএসইসি (নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন)। সম্প্রতি কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গত ৬ আগস্ট ডিএসই রসেন্ট্রালাইজড অপারেটিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (ওএমএস) পোস্টট্রেড কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। এই বিষয়ে সার্বিক দিক তদন্ত ও অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি।

ডিএসই বলছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ডিএসইর সেন্ট্রালাইজড ওএমএস-এ পোস্ট-ট্রেড প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন দেখা দেয়। কমিশন সভায় এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সভায় সার্বিক দিক বিবেচনা করে কমিশন সার্ভিল্যান্স বিভাগের পরিচালক শেখ মাহবুব উর রহমান, এমআইএস বিভাগের পরিচালক রাজিব আহমেদ, এসআরআইসি বিভাগের একজন কর্মকর্তা এবং পরিদর্শন, তদন্ত ও অনুসন্ধান বিভাগের একজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।

কমিটি অন্যান্য কার্যক্রমের সঙ্গে ডিএসইর সেন্ট্রালাইজড ওএমএস এবং ম্যাচিং ইঞ্জিনের এরর গ্লিচ এবং সর্বোপরি বিভিন্ন সময়ে টেকনিক্যাল ফেইলর সম্পর্কিত বিষয়গুলো চিহ্নিত করবে।

সেই সঙ্গে এই বিষয়ে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের সুনির্দিষ্ট দায় রয়েছে কি না, তা নির্ধারণ করবে এবং তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লিখিত বিষয়ের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সে বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করবে।

প্রসঙ্গত, গত ৬ আগস্ট ট্রেডিং শেষে শেয়ার লেনদেন নিষ্পত্তি করতে প্রায় ১২ ঘণ্টা সময় নেয় ডিএসই। এই সমস্যার কারণ জানতে প্রাথমিকভাবে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এর মধ্যে একটি কমিটি গঠন করে বিএসইসি। অপরটি করে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ।

বিএসইসি’র পক্ষ থেকে এই বিষয়ে তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলামকে। ডিএসইর পক্ষ থেকে গঠিত কমিটির প্রধান করা হয়েছে সংস্থাটির পরিচালক রুবাবা দৌলাকে।

এছাড়া কমিটিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষক ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির একজনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী ডিএসই প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে শেয়ার লেনদেন নিষ্পত্তি করে। কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে পর দিন সোমবার ভোর ৩টা পর্যন্ত এসব ব্রোকারেজের লেনদেন নিষ্পত্তি করতে পারেনি।

৬ আগস্ট নির্ধারিত সময়ে লেনদেন নিষ্পত্তি হয়নি ৬৩টি প্রতিষ্ঠানের। কারও কারও সারারাত অফিসে কাটাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, ডিএসইর লেনদেনে বিভ্রাট ও কারিগরি ত্রুটির এমন ঘটনা নতুন নয়। গত জুলাইয়ে পরপর দুদিন সার্ভারে জটিলতায় লেনদেন বিঘ্নিত হয় দেশের প্রধান এই শেয়ারবাজারে। শেয়ার বেচাকেনায় সমস্যায় পড়তে হয় বিনিয়োগকারীদের।

ডিএসইর লেনদেন সফটওয়্যার ‘ওএমএস’ সিস্টেমে নতুন একটি সেবা মডিউল সংযোজন করতে গিয়ে ওই সমস্যা দেখা দিয়েছিল বলে সে সময় জানিয়েছিলেন ডিএসই চেয়ারম্যান হাফিজ মো. হাসান বাবু।

গত বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে এক সপ্তাহে পরপর দুইবার কারিগরি ত্রুটির কবলে পড়ে ডিএসই। ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বেশ কিছু সুপারিশও করেছিল।

এদিকে ৭ আগস্ট কিছু ব্রোকারেজ হাউসের ট্রেড রিপোর্ট ডাউনলোডে সমস্যা প্রসঙ্গে ডিএসই জানিয়েছে, ডিএসইতে ট্রেডিং নির্বিঘ্নভাবে বেলা ২টা ৩০ মিনিটে শেষ হয়।

ট্রেড সমাপ্ত হওয়ার পর ব্রোকার হাউসগুলো তাদের ট্রেড ডেটা অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ফ্লেকট্রেডের মাধ্যমে ডাউনলোড করে এবং এর মাধ্যমে তাদের ক্লিয়ারিংসহ সেটেলমেন্ট-সংক্রান্ত কাজগুলো সিডিবিএল ও ব্যাক অফিসের মাধ্যমে সম্পন্ন করে।

এরপর প্রত্যেক ব্রোকার হাউস তাদের পরবর্তী দিনের ট্রেড কার্যক্রমের জন্য তাদের প্রতিটি ক্লায়েন্টের শেয়ার এবং ক্যাশ ব্যালান্সের তথ্য অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ফ্লেক্সট্রেডে আপলোড করে।

কিন্তু রোববার ট্রেড সম্পন্ন হওয়ার পর টেকনোলজি প্রোভাইডার ফ্লেক্সট্রেডের কারিগরি ত্রুটির কারণে ৬৩ ব্রোকার হাউস ফ্লেক্সট্রেড সফটওয়্যার থেকে তাদের ট্রেড-সংক্রান্ত ডেটা ডাউনলোড করতে না পারায় তাদের ট্রেড সেটেলমেন্ট-সংক্রান্ত কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

সমস্যা সমাধানের জন্য ডিএসইর আইসিটি টিম, ম্যানেজমেন্ট এবং সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার ভেন্ডর দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। রোববার রাত থেকে সোমবার ট্রেড শুরুর আগে সব ব্রোকার হাউসের সমস্যার সমাধান হয় এবং সবাই তাদের ট্রেডিং কার্যক্রমে সফলভাবে অংশ নেয়।

 

Share
নিউজটি ১০৩ বার পড়া হয়েছে ।
Tagged